বিশ্ব হয়ে উঠুক সকলের জন্য নিরাপদ স্থান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

এপ্রিল ২, ২০২১, ১০:৪৩ পিএম

বিশ্ব হয়ে উঠুক সকলের জন্য নিরাপদ স্থান

সারা পৃথিবীতে বেড়ে চলেছে অটিজম। কিন্তু অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার (এএসডি) নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা এখনও যথাসামান্য। আজ, শুক্রবার বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস, প্রতি বছর ২ এপ্রিল এ দিবসটি পালিত হয়।

অটিজম এমন একটি রোগ যার মধ্যে শিশুর মস্তিষ্ক সঠিকভাবে বিকাশ করতে সক্ষম হয় না। যারা ‘অটিজম স্পেকট্রামে’ আক্রান্ত, তারাও সমাজের অংশ। আমরা যারা সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ, অটিজম স্পেকট্রামে আক্রান্ত মানুষদের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণের মাধ্যমে সমাজের মূল স্রোতে তাদের মেশার সুযোগ দেওয়া উচিত। তবেই এ বিশ্ব হয়ে উঠবে সকল প্রাণের জন্য নিরাপদ স্থান।

অটিজম কী?

অটিজম একটি জটিল নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার। এই ব্যাপারটা নিয়ে অনেকেরই স্বচ্ছ ধারণা নেই। আর এই কারণেই অনেক বাবা মা তাদের শিশু অটিস্টিক জানলে মনের দুঃখে ভেঙ্গে পড়েন। কিন্তু অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার শুরুতে ধরা পড়লে এবং দ্রুত বাচ্চাটিকে যথাযথ চিকিৎসা দিলে তার পক্ষে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা মোটেও অসম্ভব নয়। বরং দেখা গিয়েছে, এদের বুদ্ধি অনেক বেশি। প্রচলিত পড়াশোনার পাশাপাশি এদের কিছু বিশেষ দক্ষতা থাকে।

অ্যালিস ইন দ্য ওয়ান্ডারল্যান্ড খ্যাত ল্যুই ক্যারল, চার্লস ডারউইন, শিশু সাহিত্যিক হ্যান্স অ্যান্ডারসন অ্যালবার্ট আইনস্টাইন, মাইকেল অ্যাঞ্জেলো, মোৎসার্ট, আর হাল আমলের বিল গেটস, স্টিভ জোবস-সহ অনেক সফল মানুষই অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার নিয়েও খ্যাতির শিখরে পৌঁছেছেন। এমনকি আমাদের আশেপাশেই অনেকে আছেন যারা এই ডিসঅর্ডার নিয়েও দিব্য স্বাভাবিক।

অথচ সচেতনতার অভাবে এই নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার চিনতেই পারেন না অভিভাবকরা। তাই এ রোগ সম্পর্কে আরও বেশি করে প্রচার দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো শিশুর শৈশবেই এ রোগকে চিহ্নিত করা।

এ রোগ কি বিরল?

একেবারেই নয়। আমাদের দেশে ৫৮ জন শিশুর মধ্যে একজন অটিজম নিয়েই জন্মায়। মেয়েদের চেয়ে চার গুণ বেশি এ রোগের শিকার ছেলেরা।

কী হয় এতে?

কথাবার্তা বলা, সামাজিক মেলামেশা ও স্বাভাবিক মানসিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে (বুদ্ধি ব্যাহত হয় না) তৈরি হয় অন্তরায়। অথচ বুদ্ধিগত ও অন্যান্য গুণাগুণের বিচারে কোনও পার্থক্য থাকে না আর পাঁচজনের সঙ্গে তাদের।

উপসর্গ

অতি-ঘনিষ্ঠ ছাড়া মেলামেশা নয়

বয়সের নিরিখে অনেক দেরিতে কথা বলতে শেখা

চোখে চোখ রেখে কথা বলতে না-পারা

একই কথা বা কাজ বার বার আওড়ে চলা বা করা

কারও শরীরী ভাষা, ইশারা, ইঙ্গিত, মুখের ভঙ্গির মানে না-বোঝা

একঘেয়ে রুটিনে আসক্তি। রগচটা ব্যবহার। রোজনামচা বা পরিবেশের সামান্য পরিবর্তনেই রাগ

বহির্জগৎ সম্পর্কে উদাসীনতা, যন্ত্রণা ও উত্তাপকে গ্রাহ্য না-করা, নির্দিষ্ট শব্দ ও গন্ধ সম্পর্কে অতিসংবেদনশীলতাও এই রোগের উপসর্গ।

অটিজম থেকে কি মুক্তি নেই?

অবশ্যই আছে। অ্যালবার্ট আইনস্টাইন, মোৎজার্ট, বিল গেটসের মতো মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয় যাঁরা অটিজমের বাধা টপকেও সফল। তবে প্রয়োজন চিকিৎসার। শৈশব থেকে এই রোগের চিকিৎসা করা হলে অনেকটাই নিরাময় করা যায় এই রোগ।

Link copied!