রোজা রাখার রয়েছে একগুচ্ছ শারীরিক উপকারিতাও

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ২৬, ২০২৩, ০৭:৫৩ পিএম

রোজা রাখার রয়েছে একগুচ্ছ শারীরিক উপকারিতাও

রোজা রাখলে তার একগুচ্ছ উপকারিতাও রয়েছে। এবার সেই উপকারিতাগুলি নিয়ে মুখ খুললেন বিখ্যাত চিকিৎসক তাসনিম জারা। ঠিক কী বলেছেন ডা. তাসনিম জারা?

শুরু হয়ে গেছে পবিত্র রোজার মাস। রোজা রাখার অন্তত সাতটি উপকারিতা আছে। একটি ভিডিয়োতে এই নিয়েই আলোচনা করেছেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সুপারভাইজার ডা. তাসনিম জারা।

রোজার এই মাসে বহু মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষ রোজা রাখেন। অনেকেই মনে করেন যে রোজা রাখলে শরীর অতিশয় দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে এবং গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, রোজা একটি স্বাস্থ্যসম্মত বিষয়। রোজা পালন করলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা ও নানাবিধ কঠিন রোগ প্রতিহত করে।

রোজা শুধু ধর্মীয় একটি বিষয় নয়। এর রয়েছে শারীরিক ও মানসিক উপকারিতাও। রোজা রাখার অন্তত সাতটি উপকারিতা আছে। একটি ভিডিয়োতে এই নিয়েই আলোচনা করেছেন চিকিৎসক তাসনিম জারা।

পোস্ট করা ওই ভিডিয়োতে বিশিষ্ট চিকিৎসক তাসনিম জারা বলেছেন, হাজার হাজার বছর ধরে রোজা রেখে আসলেও এটি স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ভালো নাকি খারাপ তা জানা ছিল না। তবে গত ২০-৩০ বছরে এই নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। এই গবেষণায় রোজার অনেক বিস্ময়কর উপকারিতা জানা গেছে। যে সকল উপকারিতা রয়েছে সেগুলো হলো—

১. তারুণ্য ধরে রাখা ও রোগ থেকে সুরক্ষা

তাসনিমা জানান, আমাদের শরীর কয়েক লাখ কোষ দিয়ে গঠিত। প্রতিটি কোষে বর্জ্য পদার্থের সৃষ্টি হয়। এই বর্জ্য কোষ নিজেই ‘অটোফেজি’ নামক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপসারণ ও আবার ব্যবহার উপযোগী করে তোলে। যা কোষকে সতেজ করে এবং তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে।

তিনি জানান, এই প্রক্রিয়া ঠিকভাবে না হওয়ার সাথে অ্যালজেইমার্স, পারকিনসনের মতো মস্তিষ্কের রোগ হতে পারে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। তাঁর মতে। রোজা রাখলে অটোফেজি বেড়ে যায়।

২. চর্বি কমিয়ে ফেলা

ভিডিয়োতে তাসনিমা জানান, শরীরেআগে থেকে জমিয়ে রাখা এক প্রকার গ্লুকোজেন বা চিনি নিয়ে থাকে। রোজা রাখলে ১০-১২ ঘণ্টায় এটি সাধারণত শেষ হয়ে আসে। আমাদেরকে শরীরকে চালানোর জন্য তখন আগে থেকে জমানো চর্বিতে হাত দিতে হয়। একে মেটাবলিক সুইচ বলে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে এর মাধ্যমে বেশ কয়েকটি উপকার হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

তিনি বলেন, এটা আমাদের হার্ট ভালো রাখা, পেটের চর্বি কমা, রক্তচাপ কমা, রক্তে চিনির পরিমাণ কমার মত বেশ কিছু উপকারী বিষয়।

৩. পেটের স্বাস্থ্য

আমাদের নাড়িভুড়িতে অনেক জীবাণুর বাস। যা আমাদের রোগ প্রতিরোধবৃদ্ধিসহ নানাভাবে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। না খেয়ে থাকলে আমাদের পেটে উপকারী জীবাণুর সংখ্যা বাড়ে।

৪. ওজন কমা

রমজানের সময়ে রোজা রাখলে গড়ে এক থেকে দেড় কেজি ওজন কমে।

৫. রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ

রক্তে সুগারের মাত্রা থেকে বোঝা যায়, পরবর্তীকালে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কেমন। এটা নির্দিষ্ট পরিমাণের থেকে বেশি থাকলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে । তাসনিম জানিয়ছেন, রোজা রাখলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৬. রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ

আমাদের রক্তে একধরণের চর্বি থাকে যাকে কোলেস্টেরল বলে। কোলেস্টেরল বেশি পরিমাণে থাকলে রক্তনালীতে চর্বি জমে তা সরু হয়ে যেতে পারে। ফলে হার্ট অ্যাটাক-স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। রোজা রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে।

৭. ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ

রোজার আগে এবং পরে ব্লাড প্রেসার মেপে দেখা গেছে, যারা রোজা রেখেছেন তাদের ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে আছে।

Link copied!