আগামী সপ্তাহে অর্থাৎ জুলাই মাসের শুরুতেই চীন থেকে কেনা দেশটির ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের টিকার প্রথম বাণিজ্যিক চালান আসতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশে প্রবাসী কর্মীদের ফাইজারের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানান।
সোমবার (২৮ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আগামী মাসের শুরুতে ক্রয়কৃত সিনোফার্মের করোনা টিকার প্রথম চালান আসতে পারে।
‘আমাদের লক্ষ্য ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেয়া’ উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘টিকা দিতে পারলে বড় অংশকে সুরক্ষিত করতে পারব। গ্রামপর্যায়ে ভ্যাক্সিনেট করতে চাই, যেসব শ্রমিকরা বিদেশ যাবের তাদের টিকায় অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’
বাংলাদেশ চীন থেকে উপহার হিসেবে এরই মধ্যে দুই ধাপে ১১ লাখ টিকা পেয়েছে। এর মধ্যে ৩০ হাজার ডোজ বাংলোদেশে কর্মরত চীনা নাগরিকদের দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট ১০ লাখ ৭০ হাজার ডোজ টিকা দেশের ৫ লাখ ৩৫ হাজার মানুষকে দেওয়ার কার্যক্রম চলছে।
বৈশ্বিক টিকা বিতরণ সংস্থা কোভ্যাক্সের পক্ষ থেকেও ফাইজারের এক লাখ ৬ হাজার ডোজ টিকা দেশে এসেছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘কোভ্যাক্সের কাছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ টিকা চাওয়া হয়েছে। আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে এই টিকার চালান আসতে পারে। তবে কী পরিমাণ আসবে, সেটা এখনও জানায়নি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘করোনার টিকা নিয়ে বিশ্বব্যাপী পলিটিক্স চলছে, আমরাও সেই পলিটিক্সের শিকার।’ ভ্যাকসিন আনার ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগ প্রশংসনীয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে দেশে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়। সিরাম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা কেনার চুক্তিও হয়। চুক্তির আওতায় প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার কথা বাংলাদেশকে। তবে মাত্র ৭০ লাখ টিকা দিয়ে সরবরাহ বন্ধ রাখে সিরাম ইনস্টিটিউট। বাণিজ্যিকভাবে ৭০ লাখ টিকা দেওয়া ছাড়াও ভারত ৩৩ লাখ টিকা উপহার হিসেবে দেয়।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় এক পর্যায়ে ভারত সরকার বাইরের দেশে করোনার টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এতে বাংলাদেশেও বন্ধ হয়ে সিরামের টিকা সরবরাহ। পাশপাশি দেশে বন্ধ হয়ে যায় টিকাদান কর্মসূচি।
পরবর্তীতে বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে নিজেদের ওষুধ কোম্পানির তৈরি সিনোফার্মের ১১ লাখ টিকা দেয় চীন সরবার। আর এই টিকা দিয়ে আবার দেশে শুরু হয় টিকাদান কার্যক্রম।