সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১, ০৪:৫১ পিএম
বাংলাদেশের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ মানুষের শরীরে করোনার এন্টিবডি তৈরী হলেও ডেল্টার মতো করোনা ভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন যে আবারও আসবে না তা নিশ্চিত করে বলা যায়না। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ম্যাগসেসে পুরস্কারজয়ী প্রতিষেধকবিদ্যা ও সংক্রামক রোগ গবেষক ড. ফেরদৌসী কাদরী এ কথা জানান।
ডা. ফেরদৌসী কাদরী বলেন, বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ কমলেও খুব বেশি আশান্বিত হওয়ার কিছু নেই। অনেক দেশেই সংক্রমণ কমে আবার বেড়ে যাওয়ার নজির রয়েছে। তাই করোনার সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মেনে চলার পাশাপশি সবচেয়ে বেশি দরকার হলো ব্যাপক হারে টিকা দেওয়া।
এসময় নারীর অবস্থান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ডা. ফেরদৌসী জানান, নারীদের লড়াই শুধু বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশেই নয়, সারা বিশ্বেই রয়েছে। এ কঠিন লড়াইয়ে ধৈর্য, সহনশীলতা, দায়িত্বশীলতা দরকার। তবে এই দায়িত্বশীলতা শুধু কাজের ক্ষেত্রে নয়, পরিবারের সব সদস্যের প্রতিও তা পালন করতে হবে’।
নিজের পরিচয় এবং তার এই পর্যায়ে আসার পেছনেরে ঘটনা নিয়ে ডা. ফেরদৌসী কাদরী বলেন, ‘আমি মনেপ্রাণে বাংলাদেশী। আমার স্বামী এবং আমার পরিবার এবং মানুষের অকুণ্ঠ সহযোগিতায়ই আমি বর্তমান পর্যায়ে আসতে পেরেছি। আমার প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআরবির সহকর্মীদের আন্তরিক সহযোগিতাও আমি পেয়েছি’।
ম্যাগসেসে কমিটির পক্ষে সুসান আফানের প্রশ্ন ছিলো বাংলাদেশের চেয়ে ফিলিপাইনের জনঘনত্ব অনেক কম হলেও বাংলাদেশে কয়েক সপ্তাহ ধরেই করোনায় সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ২ হাজারের নিচে। কিন্তু ফিলিপাইনে এখনো প্রতিদিন সংক্রমিত হচ্ছে প্রায় ১৮ থেকে ২০ হাজার। বাংলাদেশের এ সাফল্যের নেপথ্যে কী রয়েছে?
এর জবাবে ডা. ফেরদৌসী কাদরী বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ কিছুটা কম হলেও এটা নিয়ে এখনই উপসংহারে আসা যাবে না। বাংলাদেশ সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। মানুষের মধ্যে মাস্ক পরার প্রবণতাও বেশি দেখা যাচ্ছে’।
প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) ইমিউনোলজি বিভাগের প্রধান ড. ফেরদৌসী কাদরী কলেরার টিকা নিয়ে গবেষণা এবং সাশ্রয়ী দামে সহজলভ্য করে লাখো প্রাণ রক্ষায় কাজ করেছেন ফেরদৌসী কাদরী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টিকা বিষয়ক বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, ডা. ফেরদৌসী কাদরীর ম্যাগসেসে পুরস্কার পাওয়ার ঠিক তার পরদিন তার স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ সালেহীন কাদরী মারা যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই বিজ্ঞান শিক্ষক তার স্ত্রীর ম্যাগসেসে পুরস্কার লাভের খবর জেনে যেতে পারেননি। ফেরদৌসী কাদরী বিজ্ঞানচর্চার কঠিন পথে তাঁর স্বামীর সার্বক্ষণিক সহযোগিতাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।