আগস্ট ১৭, ২০২২, ০৯:২৭ পিএম
বাংলাদেশে গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনায় জাতিসংঘ নিরপেক্ষ তদন্ত চায় বলে জানিয়েছেন ঢাকায় সফররত সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাচলেট। পাশাপাশি বিরোধী রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ, সংলাপের সুযোগ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়ক নানা ইস্যুতে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ আগামী নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান বলেন, “একটি উত্তেজনাকর ও মেরুকরণের দিকে যাচ্ছে। এই অবস্থায় সুশীল সমাজের কর্মকাণ্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলেও সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন অধিকার কর্মীদের কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হয়েছে।”
টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আগামী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মিশেল ব্যাচলেট বলেন, “এসময় রাজনৈতিক দল, কর্মী, সুশীল সমাজের কর্মীদের সভা-সমাবেশের সুযোগ দেওয়া জরুরি। তাদের অধিকার থেকে যদি বঞ্চিত করা হয় তাহলে সামাজিক অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে। নারী, সংখ্যালঘু, তরুণদের দাবি বা চাওয়া শুনতে হবে। ওই সময়টাতে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকবে সেখানে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।” আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশকে কাজ করতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে জাতিসংরঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান বলেন, “আমি কক্সবাজার রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছি। এই সংকটের মূল কারণ খুঁজে বের করতে হবে। তবে দুঃখজনক হলেও এই মুহূর্তে রোহিঙ্গাদের ফেরার সুযোগ নেই।”
এসময় তিনি আরও বলেন, “রোহিঙ্গা হত্যার তদন্ত করতে হবে। এর পেছনে কারা ছিল, বের করতে হবে। রুয়ান্ডার গণহত্যার তদন্ত যেভাবে হয়েছে, এখানেও সেটা জরুরি।”
ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন পক্ষের সাথে আমার আলাপ হয়েছে। সে সময় ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছি আমি।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার চারদিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে আসেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট। প্রথম দিনেই তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন। বুধবার তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রধান হিসেবে এটিই তার প্রথম বাংলাদেশ সফর।