এপ্রিল ১৬, ২০২৫, ০৮:৪৭ পিএম
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে টাইম ম্যাগাজিনের ২০২৫ সালের বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
২০২৪ সালে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তার গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ এই সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে টাইম–এ প্রকাশিত লেখায় সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন বাংলাদেশের ইতিহাসের এক সংকটময় মুহূর্তে নেতৃত্ব নেওয়ার জন্য ড. ইউনূসের প্রশংসা করেন।
“গত বছর ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণ করার পর, একজন পরিচিত নেতা জাতিকে গণতন্ত্রের পথে পরিচালিত করতে এগিয়ে আসেন: নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস,”—লিখেছেন হিলারি ক্লিনটন।
প্রতিবেদনটিতে ড. ইউনূসের দারিদ্র্য বিমোচনে অনন্য ভূমিকার কথাও স্মরণ করা হয়েছে। ১৯৭০-এর দশকে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন গ্রামীণ ব্যাংক, যার মাধ্যমে বিশেষ করে নারীদের জন্য ক্ষুদ্রঋণের সুবিধা নিশ্চিত করে তিনি আর্থিক অন্তর্ভুক্তির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন।
“অনেক আগেই ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে দেশের সবচেয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ছোট ঋণের মাধ্যমে ক্ষমতায়ন করেছেন। এর ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ—যাদের ৯৭ শতাংশই নারী—নিজেদের ব্যবসা গড়ে তুলতে, পরিবারকে সহায়তা করতে এবং মর্যাদা ফিরে পেতে সক্ষম হয়েছেন,”—উল্লেখ করেন হিলারি ক্লিনটন।
তিনি ড. ইউনূসের সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং তাঁর বৈশ্বিক প্রভাব নিয়েও কথা বলেন।
“আমি প্রথম ইউনূসকে দেখি তখন তিনি আরকানসাসে এসেছিলেন, যেখানে তখনকার গভর্নর বিল ক্লিনটন ও আমার সঙ্গে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রে অনুরূপ কর্মসূচি চালুর সহায়তা করেন। এরপর আমি বিশ্বের বহু দেশে গিয়ে তাঁর কাজের অসাধারণ প্রভাব প্রত্যক্ষ করেছি—জীবন বদলে গেছে, সমাজ এগিয়ে গেছে, আর আশার নতুন আলো জ্বলে উঠেছে।”
আবারও জাতীয় নেতৃত্বে ফিরে এসে, ড. ইউনূস এবার শুধু তাঁর অতীত অবদানের জন্য নয়, বরং বর্তমানে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন ও নাগরিক অধিকার রক্ষায় তাঁর অব্যাহত প্রচেষ্টার জন্য সম্মানিত হচ্ছেন।
“এখন, ইউনূস আবারও তাঁর দেশের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। তিনি দেশকে নিপীড়নের ছায়া থেকে টেনে বের করে আনছেন, মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করছেন, জবাবদিহিতার দাবি তুলছেন এবং একটি ন্যায়ভিত্তিক ও মুক্ত সমাজের ভিত্তি স্থাপন করছেন,”—বলেছেন হিলারি ক্লিনটন।
টাইম–এর এই বার্ষিক তালিকায় বিশ্বের এমন সব ব্যক্তিকে সম্মানিত করা হয়, যাঁরা তাদের প্রভাব, উদ্ভাবন এবং নেতৃত্বের মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করেন।