এপ্রিল ১২, ২০২৫, ০৬:১২ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
কারিগরি ত্রুটির কারণে ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় নির্মিত আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে।
প্রথম ইউনিট থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়েছে ৮ এপ্রিল। আর দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ হয়েছে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
পিজিসিবি ও পিডিবি সূত্র বলছে, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ শুরু না হলে আগামীকাল রোববার লোডশেডিং আরও বাড়তে পারে। ঘাটতি মেটাতে পেট্রোবাংলার কাছে বাড়তি গ্যাস সরবরাহ চেয়েছে পিডিবি।
বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের রাষ্ট্রীয় সঞ্চালন সংস্থা পাওয়ার গ্রিড পিএলসি বাংলাদেশ (পিজিসিবি) ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তিনজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এটি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তারা বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছিল। ৮ এপ্রিলের পরও ৭৫০ মেগাওয়াটের বেশি সরবরাহ করা হয়েছে। এখন আর কোনো বিদ্যুৎ আসছে না। আজ শনিবার সন্ধ্যায় একটি ইউনিট চালু করার কথা রয়েছে। খবর প্রথম আলো।
আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দাম নিয়ে বিরোধ আছে। এটি নিয়ে আদানি ও পিডিবির মধ্যে আলোচনা চলছে। বকেয়া শোধ নিয়েও বিভিন্ন সময় তাগাদা দিয়েছে আদানি। গত বছর একবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করেছিল আদানি। এরপর নিয়মিত চলতি বিল পরিশোধ করায় তারা একটি ইউনিটের উৎপাদন চালু করে। গত ফেব্রুয়ারিতে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহের অনুরোধ করে পিডিবি। গত মার্চের শুরু থেকেই দুটি ইউনিটের বিদ্যুৎ সরবরাহ করে তারা।
পিজিসিবি ও পিডিবি সূত্র বলছে, শনিবার ছুটির দিন থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা অন্য দিনের চেয়ে কিছুটা কম আছে। আজ বেলা একটা পর্যন্ত সর্বোচ্চ চাহিদা উঠেছে ১৩ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। এ সময় ৩০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়েছে। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ শুরু না হলে আগামীকাল লোডশেডিং আরও বাড়তে পারে। ঘাটতি মেটাতে পেট্রোবাংলার কাছে বাড়তি গ্যাস সরবরাহ চেয়েছে পিডিবি।
পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) মো. জহুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের ত্রুটি মেরামতের চেষ্টা করছে আদানি। প্রথমে বন্ধ হওয়া ইউনিট দ্রুত চালুর চেষ্টা চলছে। ঘাটতি মেটাতে তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাড়তি উৎপাদন করা হচ্ছে। গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে অনুরোধ করা হয়েছে। জ্বালানির সরবরাহ পাওয়া গেলে চাহিদামতো উৎপাদন করা যাবে।
আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার। ৮০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে এ কেন্দ্রে। এতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২৫ বছর ধরে কিনবে বাংলাদেশ। প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিলে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় একই বছরের জুনে। ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে পিডিবি। আদানির সঙ্গে পিডিবির চুক্তি পর্যালোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত একটি কমিটি কাজ করছে।