সেপ্টেম্বর থেকে ভাসানচরে যুক্ত হচ্ছে জাতিসংঘ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ২৯, ২০২১, ০৯:৫৭ এএম

সেপ্টেম্বর থেকে ভাসানচরে যুক্ত হচ্ছে জাতিসংঘ

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে পালিয়ে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার পর তাদের মানবিক সহায়তায় কাজ করতে আগামী সেপ্টেস্বরে যুক্ত হচ্ছে জাতিসংঘ। এজন্য রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তায় কীভাবে কাজ করবে তা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকের খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে সংস্থাটি।

আসছে আগস্ট মাসের প্রথমার্ধে সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর আগামী সেপ্টেম্বর থেকেই মাঠপর্যায়ে জাতিসংঘ কাজ শুরু করবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সুত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই সূত্র জানায়, সমঝোতা স্মরকের খসড়া নিয়ে বুধবার (২৮ জুলাই) দুপুরে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আলোচনায় বসেছিলেন। তৃতীয় দফা আলোচনার পর জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকার সমঝোতা স্মারকের খসড়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। চার পৃষ্ঠার ওই খসড়ায় মূলত ভাসানচরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতিসংঘ কীভাবে কার্যক্রম চালাবে, সে বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে।

ঢাকায় জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের একটি বৈঠকের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বুধবার বিকেলে গণমাধ্যমে এ তথ্য জানান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কক্সবাজার ও ভাসানচরের পরিবেশ ও পরিস্থিতি যেহেতু ভিন্ন, কার্যক্রমের ধরনও হবে আলাদা। কক্সবাজারে শুরু থেকেই জাতিসংঘকে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় নজর দিতে হয়েছে। সে তুলনায় ভাসানচরে কিছুটা ভালো পরিস্থিতিতে মানবিক কার্যক্রম চালাবে জাতিসংঘ।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের  শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জীবিকার কর্মসূচি, যাতায়াতসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করে কাজের পরিধি ঠিক করেছে। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের শিক্ষাকার্যক্রম মিয়ানমারের ভাষায় এবং সে দেশের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পরিচালিত হবে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের  রাখাইনে ফিরে গিয়ে যাতে সেখানকার শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে, সেটি বিবেচনায় নিয়ে এটা করা হয়েছে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘ শুরু থেকেই বিরোধীতা করে আসছে। বর্ষাকালে ভাসা্নচর কেমন থাকবে, ওখানে বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা, তাদের স্বেচ্ছায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কিনা, ভাসানচর থেকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে চলাচলের সুযোগ নিশ্চিত করাসহ অনেক জিজ্ঞাসা ছিল জাতিসংঘের।

২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে সরিয়ে নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ছয় দফায় মিয়ানমারের ১৮ হাজার ৫২১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ভাসানচরে ৮ হাজার ৭৯০ জন পুরুষ, ৫ হাজার ৩১৯ জন নারী ও ৪ হাজার ৪০৯ নজন শিশু রয়েছে।

Link copied!