আগস্ট ২১, ২০২৪, ০৫:০০ এএম
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পূর্বের ভাঙা বাঁধের ২৪টি স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে পরশুরাম ও ফুলগাজীর ৭০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং এসব গ্রামের ১৩ হাজার পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
ফেনী জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্বের ২৪টি স্থান দিয়ে ফুলগাজী ও পরশুরামের ৭০টি গ্রামে পানি প্রবেশ করে। এতে ১৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। যা এ-যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুলগাজী উপজেলা বাজারে উত্তরাংশে হাঁটু ও কোমর সমান পানি থাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় জীবন বাঁচাতে ছোট শিশুকে কোলে নিয়ে নৌকায় করে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে চলে যেতে দেখা যায় স্থানীয়দের।
পানিবন্দী অবস্থার বর্ণনা দিয়ে ফুলগাজীর সদর ইউনিয়নের ঘনিয়ামোড়ার গ্রামের একজন কৃষক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, “আমার বাড়ি থেকে আসার পথে এক গলা পানি ও ঘরে কোমর সমান পানি উঠেছে। আমার তিনটা গরু ছিল একটা গাভী পানিতে ডুবে গরু মারা গেছে। বাকিগুলোও যায় যায় অবস্থা। আমার ৪৫ বছর বয়সে এত পানি দেখিনি।”
ফুলগাজীর সদর ইউনিয়নের ঘনিয়ামোড়ার গ্রামের বাসিন্দা মো. মনির আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, “১৯৮৮ সালে একবার ভয়াবহ বন্যায় ঘরবাড়িতে পানি উঠেছিল। এবারের বন্যা তার চেয়েও ভয়াবহ। ঘরবাড়িতে গতবারের চেয়ে বেশি পানি উঠেছে। সেজন্য পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি।”
ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, “পরশুরাম ও ফুলগাজীর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জনগণের নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় খবারের ব্যবস্থা রয়েছে। স্থানীয়ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদ শাহারিয়ার বলেন, “টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পূর্বের ভাঙা বাঁধের ২৪টি স্থান দিয়ে পানি লোকালয়ে ঢুকেছে। পানি নেমে গেলে বাঁধগুলো মেরামত করা হবে।”