নগদের ৬৪৫ কোটি টাকা ‘আত্মসাতের’ অভিযোগে সাবেক এমডি মিশুকসহ আসামি ৯ জন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ৪, ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম

নগদের ৬৪৫ কোটি টাকা ‘আত্মসাতের’ অভিযোগে সাবেক এমডি মিশুকসহ আসামি ৯ জন

ছবি: সংগৃহীত

মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’-এর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর আহমেদ মিশুকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে ৬৪৫ কোটি টাকা ‘আত্মসাতের’ অভিযোগে মামলা করেছে দুদক।

বুধবার, ০৪ জুন দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।

দুদকের মহাপরিচালক বলেন, এই মামলায় মিশুক ছাড়াও নগদের আরও আটজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে রয়েছেননির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলম, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নমিনি পরিচালক মোহাম্মদ আমিনুল হক, সিনিয়র ম্যানেজার মারুফুল ইসলাম ঝলক, চিফ টেকনোলজি অফিসার (সিটিও) মো. আবু রায়হান, চিফ ফাইন্যান্স অফিসার (সিএফও) আফজাল আহমেদ, হেড অব ফাইন্যান্স মো. রাকিবুল ইসলাম, চিফ কমার্শিয়াল অফিসার (সিসিও) শিহাব উদ্দিন চৌধুরী ও হেড অব বিজনেস ইন্টেলিজেন্স গোলাম মর্তুজা চৌধুরী।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২১ সালের ১ মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত এক ‘সুপরিকল্পিত জালিয়াতির’ মাধ্যমে ‘ট্রাস্ট-কাম-সেটেলমেন্ট’ হিসাবে প্রকৃত নগদ অর্থের (ফিজিক্যাল মানি) তুলনায় অতিরিক্ত ৬৪৫ কোটি ৪৭ লাখ ১০ হাজার ৭৫৮ টাকা ৯০ পয়সা ইলেকট্রিক বা ই-মানি ছাড়া হয়। এরপর এই অতিরিক্ত ই-মানি ৪১টি অনুমোদনহীন পরিবেশকের মাধ্যমে ‘ফেরত’ দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়।

এ ঘটনায় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ৪৭৭ক ও ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এই ‘অপরাধে নেতৃত্ব’ দিয়েছেন তানভীর আহমেদ মিশুক, মো. সাফায়েত আলম, মোহাম্মদ আমিনুল হক ও মারুফুল ইসলাম ঝলক। তারা পরিকল্পিতভাবে মো. আবু রায়হান, মো. রাকিবুল ইসলাম, আফজাল আহমেদ, শিহাব উদ্দিন চৌধুরী ও গোলাম মর্তুজা চৌধুরীর সহায়তায় হিসাবপত্রে ‘জালিয়াতি করে মিথ্যা তথ্য ও ভুয়া প্রতিবেদন তৈরি করেন’। এই ভুয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অতিরিক্ত ই-মানি ছাড়া ও তা অনুমোদনহীন পরিবেশকের মাধ্যমে তুলে ‘আত্মসাৎ’ করা হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, সহায়তাকারী পাঁচ কর্মকর্তাআবু রায়হান, রাকিবুল ইসলাম, আফজাল আহমেদ, শিহাব উদ্দিন চৌধুরী ও গোলাম মর্তুজা চৌধুরী‘নগদ লিমিটেড’-এর প্রোডাকশন (লাইভ) সিস্টেমে অনুমোদন ছাড়াই ৪১টি পরিবেশকের তথ্য যুক্ত করেন। এরপর প্রোডাকশন ডেটাবেইজ থেকে বিআই পোর্টাল ও বিপিও পোর্টালে ডেটা স্থানান্তর করে কাস্টমাইজড রিপোর্ট তৈরি ও সরবরাহ করা হয়। এসব প্রতিবেদন ব্যবহার করে অতিরিক্ত ই-মানি ছাড়া ও তা অনুমোদন ছাড়াই তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়।

মামলার এজাহারে ঘটনাস্থল হিসেবে ‘নগদ লিমিটেড’-এর প্রধান কার্যালয় (আগের নাম: থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেড), ৩৬, ডেলটা ডালিয়া, কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ, বনানী, ঢাকাএবং অন্য সংশ্লিষ্ট স্থান উল্লেখ করা হয়েছে।

তার আগে চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘নগদ’-এর বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। সেখানে নগদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুকসহ মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়।

সেই মামলায় বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৩ সালের ২১ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত নগদের কার্যক্রম পরিদর্শন করে এবং বিভিন্ন ব্যাংকের ‘ট্রাস্ট-কাম-সেটেলমেন্ট’ হিসাবে ছাড়কৃত ই-মানির বিপরীতে রিয়েল মানির ১০১ কোটি টাকার বেশি ঘাটতি পাওয়া যায়।

Link copied!