কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ: শাহবাগ ও বাংলা মোটর অবরোধ শিক্ষার্থীদের

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ৭, ২০২৪, ১১:৫৫ এএম

সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে আবারও রাজধানীর শাহবাগ ও বাংলা মোটর এলাকা অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন: ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি, অচল রাজধানী

রোববার (৭ জুলাই) বিকেল পাঁচটার দিকে বাংলা মোটর এলাকায় অবরোধ শুরু করেন তারা।

বাংলা মোটর মোড়ে গাড়ি থামিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: উম্মেহানি আইরিন/দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

একই দিন বিকেল পৌনে চারটার দিকে শাহবাগ অবরোধ শুরু করেন তারা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ‘বাংলা ব্লকেডে’ অংশ নিতে বিকেল তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন হল ও বিভাগের ব্যানারে দলে দলে শিক্ষার্থীরা মিছিলে যোগদান করতে থাকেন। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন, হল পাড়া হয়ে, ভিসি চত্বর ও ছাত্র-শিক্ষক সম্মেলন কেন্দ্র (টিএসসি) প্রদক্ষিণ করে শাহবাগে এসে অবস্থান নেন তারা। এ সময় তারা গানে গানে ও শ্লোগানে শ্লোগানে আন্দোলনের সঙ্গে নিজেদের সংহতি জানান।

কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে রাস্তায় বসে পড়েন চাকরিপ্রার্থী ও শিক্ষার্থীরা। ছবি: উম্মেহানি আইরিন/দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

গতকাল শনিবার বিকেলে কোটা আন্দোলনকারীদের শাহবাগ অবরোধের পর দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী চাকরিপ্রত্যাশী ও শিক্ষার্থীরা। এদিন অবরোধ তুলে নেওয়ার আগে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’র সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “আগামীকাল বিকেল তিনটা থেকে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। শুধু শাহবাগ মোড় নয়, শাহবাগ ও ঢাকা শহরের সায়েন্স ল্যাব, চানখাঁরপুল, নীলক্ষেত, মতিঝিলসহ সব পয়েন্টে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা নেমে এসে কর্মসূচি সফল করবেন। ঢাকার বাইরের জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করবেন।”

সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে ৪ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।

গানে, শ্লোগানে শাহবাগ মুখর। ছবি: মীর ইফতেখারুল হাসান/দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

কোটা আন্দোলন ২০২৪: চার দফা দাবি

  • ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধা-ভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে।
  • ‘১৮’র পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী শুধু অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
  • সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শুন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
  • দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ ও জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। সেখানে বলা হয়েছিল, নবম-ত্রয়োদশ গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওইসব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা বাতিল করা হলো।

সাইকেল ফেলে রেখে প্রতীকী প্রতিবাদ। ছবি: উম্মেহানি আইরিন/দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

এই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিল সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের জারি করা এই পরিপত্র বাতিল করা হয় গত ৫ জুন। এরপর আবারও ক্যাম্পাসগুলোতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।

ফেসবুকে সরাসরি

বাংলা মোটর থেকে

শাহবাগ থেকে

সায়েন্স ল্যাব এলাকা থেকে

Link copied!