‘প্রথম আলো’র সাংবাদিককে মধ্যরাতে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ২৯, ২০২৩, ১২:৫৯ পিএম

‘প্রথম আলো’র সাংবাদিককে মধ্যরাতে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

প্রথম আলো পত্রিকার একজন সাংবাদিককে মধ্যরাতে ধরে নিয়ে গেছে সাদা পোশাকের একদল ব্যক্তি। তারা নিজেদের সিআইডি বলে পরিচয় দিয়েছে। ওই সাংবাদিকের নাম শামসুজ্জামান শামস। তিনি দৈনিকটির সাভার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ এই ঘটনা গণমাধ্যমের কাছে নিশ্চিত করেছেন।

সাজ্জাদ শরীফ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, আমাদের সাভার প্রতিনিধিকে গতকাল মধ্যরাতে সিআইডি পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকে ধরে নিয়ে গেছে। এরপর থেকে এখনো আমরা তাঁর কোনো খোঁজ পাইনি। এ বিষয়ে আমরা আইনানুগভাবে যেসব পদক্ষেপ নেওয়ার সেভাবেই পদক্ষেপ নেবো।

তবে সিআইডি বা স্থানীয় পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই আটকের বিষয়টি তাদের জানা নেই।

সেই সময় জাহাঙ্গীরনগরের আমবাগান এলাকায় শামসের বাসায় ছিলেন ঢাকার আরেকটি পত্রিকার আরেকজন সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম সাব্বির। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, রাত চারটার দিকে তিনটি মাইক্রোবাস নিয়ে সাদা পোশাকের একদল লোক বাসা থেকে শামসুজ্জামান শামসকে ধরে নিয়ে যায়। তারা তার ল্যাপটপ, দুটো ফোন, পেন ড্রাইভ, কম্পিউটারের হার্ডডিস্কও নিয়ে যায়। ওই সময় সাব্বিরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁরা নিজেদের সিআইডির টিম বলে পরিচয় দিয়ে জানিয়েছে, তারা ঢাকা থেকে এসেছে।

প্রথম দফায় তাকে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে এই দলটি আবার বাসায় ফিরে আসে। এরপর তাঁরা আবার বাসায় এসে একটি জব্দ তালিকায় সাব্বির এবং বাড়িওয়ালার স্বাক্ষর নিয়ে যায়। এরপর থেকে শামসুজ্জামান শামসের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।

তবে দ্বিতীয়বার বাসায় যাওয়ার সময় আশুলিয়া থানার একজন উপ-পরিদর্শক এই টিমের সাথে ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। 

সিআইডির ঢাকা বিভাগের উপ-মহাপরিদর্শক মো. ইমাম হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, সিআইডির ঢাকা বিভাগের কেউ শামসুজ্জামানকে আটক করতে যায়নি। তাকে আটক করা হলে আমার জানা থাকতো।

আর আশুলিয়া থানার ওসি এস এম কামরুজ্জামান বলেছেন, এই বিষয়ে তাদের কিছু জানা নেই। তারা কাউকে আটক করেননি।

প্রসঙ্গত, গত ২৬শে মার্চ দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকাশিত একটি সচিত্র সংবাদে একজন দিনমজুরের বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে উদ্বৃত করা হয়, পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।

প্রকৃতপক্ষে ওই শিশু দিনমজুর ছিল না। এ ছাড়া সে বক্তব্যও ওরকম দেয়নি। তার যে নাম পত্রিকাটি প্রকাশ করে, সেটিও তার নাম নয়। ওই সংবাদটি সাথে সাথে ভাইরাল হলে প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ সেটি সরিয়ে নেয়।

প্রথম আলোর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, প্রথমে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের শিরোনাম এবং ব্যবহার করা ছবির মধ্যে অসঙ্গতি থাকায় ছবিটি তুলে নেওয়া হয়েছে এবং শিরোনাম সংশোধন করা হয়েছে।

Link copied!