আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০১:২৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ব্যরিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও রুহুল আমিন হাওলাদার নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি এবার নির্বাচন কমিশনের ‘স্বীকৃতি` চাইছে।
৯ আগস্ট কাউন্সিল করার পরদিনই নব নির্বাচিত কমিটির চার জনের তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে তারা।
বাকি দুজন হলেন সিনিয়র কো চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশিদ ও নির্বাহী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু।
জানতে চাইলে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, “আমরা প্রসিডিউর মেনে কাউন্সিলের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি। আমরা তো নিবন্ধিত ১২ নম্বর দলের (জাপা, প্রতীক লাঙ্গল) কাউন্সিল করেছি।” খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে বাদ দিয়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা শনিবার এই কাউন্সিল করে; যাকে তারা দলের ‘দশম কাউন্সিল’ বলছেন । সেখানে আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে চেয়ারম্যান এবং রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব নির্বাচন করা হয়।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদরা নিজেদের এই কমিটিকে জাতীয় পার্টির ‘মূল ধারা’ দাবি করছেন। ওই কাউন্সিলকে গঠনতান্ত্রিকভাবে ‘বৈধ’ দাবি করে তারা বলছেন, লাঙ্গল প্রতীক ব্যবহারের বৈধ অধিকার কেবল তাদের কমিটিরই আছে।
তবে চিঠিতে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন তারা।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনকে সব কাগজপত্র দিয়েছি। দেখা যাক, আমরা আগে কিছু বলতে চাই না। ইসিতে ডকুমেন্ট দিয়েছি, উনারা দেখুক, সিদ্ধান্ত দিক।”
‘জাতীয় পার্টির দশম কাউন্সিল পরবর্তী নব নির্বাচিত নেতৃত্বের’ তথ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবের বরাবরে এ চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, ৯ অগাস্ট গুলশানের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সারাদেশের প্রায় ৫ হাজার কাউন্সিলররে অংশগ্রহণে চার জনকে কণ্ঠভোটে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির শীর্ষপদে নির্বাচিত করা হয়েছে। শিগগিরই কমিশনে হালনাগাদ তথ্য দেওয়া হবে।
তবে জাতীয় পার্টির ‘গঠনতন্ত্রে’ চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের একচ্ছত্র এখতিয়ারের কারণে এসব আবেদন ইসি আমলে নেবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পযন্ত ইসিতে জিএম কাদেরের দল নিবন্ধিত এবং তাদের প্রতীক লাঙ্গল। এ নিয়ে অন্য কারো কাউন্সিল আমলে নেওয়ার কথা নয়। তবুও যে কোনো ধরনের আবেদন এলে ইসির কাছে উপস্থাপন করা হয়, কমিশন বিষয়টি আলোচনা করে নিষ্পত্তি করবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে কয়েক দফা ফোন করলেও তাদের সাড়া মেলেনি।
তবে কাকরাইলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় তরুণ পার্টির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় শামীম হায়দার বলেছেন, “মূল স্রোতের বাইরে গিয়ে যারা জাতীয় পার্টিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চেয়েছে, তারাই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
“জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেবে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও জিএম কাদেরের অনুসারীরা। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের নেতৃত্বে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছে।”
জি এম কাদের গত ৭ জুলাই তখনকার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ দলের ১০ নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন।
পরে অব্যাহতি পাওয়া নেতারা আদালতের দ্বারস্থ হলে ৩১ জুলাই জি এম কাদের এবং যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আদালত। এরপর তাকে বাদ দিয়েই গেল জাতীয় কাউন্সিল করেন বিদ্রোহী জ্যেষ্ঠ নেতারা।