আগস্ট ৭, ২০২৫, ০৬:৫০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কয়েকজন নেতার কক্সবাজার সফরকে ঘিরে জনমনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘আপনারা যেতেই পারেন, অসুবিধার কিছু নেই। সেখানে যদি কোনো কূটনীতিকের সঙ্গে আপনাদের আলাপ-আলোচনা হয়, হওয়ার যদি প্রোগ্রাম থাকে, সেটা হতেই পারে। কিন্তু মানুষের সংশয় হচ্ছে, সন্দেহ হচ্ছে, এই লুকোচুরি কেন?’
বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট সকালে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির শুক্রভাঙ্গা এলাকায় মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে নিহত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অফিস সহকারী মাসুমা বেগমের বাসায় যায় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর একটি প্রতিনিধিদল। সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রুহুল কবির রিজভীও সঙ্গে যান। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রিজভী এনসিপি নেতাদের সফরের প্রসঙ্গে টেনে এ কথা বলেন।
এনসিপির উদ্দেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজকে এই হোটেলে আছি, তার পরের দিন কিছু সংবাদপত্রে কিছু কথা উঠল, তার পরের দিন আবার হোটেল পরিবর্তন করা, আবার আরেক জায়গায়, এটা মানুষ সন্দেহ করে। এটা করবেন কেন?’
একই প্রসঙ্গে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আজকে জনমনে আপনারা কেন সুযোগটি তৈরি করে দিচ্ছেন? কেন আপনাদের নিয়ে বিভিন্ন কথা উঠছে? আপনারা যেকোনো কাজেই যেতে পারেন, যে কারোর সঙ্গেই সাক্ষাৎ করতে পারেন, ওটা প্রকাশ্যে জানিয়ে দিন। সেটা আপনারা মিডিয়াকে বলুন, তাহলে তো আর কোনো প্রশ্ন আসে না।’
এসময় জন-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা রমজানের আগেই (আগামী বছর) নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানাই, জনগণের দাবি, মানুষের দাবি, মানুষের আকাঙ্ক্ষা, সেই আকাঙ্ক্ষাকে তিনি ধারণ করে রমজানের পূর্বেই নির্বাচন ঘোষণা করেছেন। আমি মনে করি, শুধু রাজনৈতিক দল নয়, জন–আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি এই ঘোষণাটা দিয়েছেন।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ সরকার উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজ আমরা যেটা খবরের কাগজে দেখেছি, নির্বাচন কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে অতি শীঘ্র শিডিউল ঘোষণা করা এবং নির্বাচনী কাজকর্ম শুরু করার জন্য। আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নিরপেক্ষ সরকার, গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য একটি প্রস্তুতিমূলক সরকার, বিপ্লবী সরকার এবং এই সরকার সমস্ত জন–আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করবেন, এটাই মূল কথা।’ অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
পরে নিহত মাসুমা বেগমের স্বামী মোহাম্মদ সেলিমের হাতে এককালীন আর্থিক সহায়তা তুলে দেন রিজভী। একই সঙ্গে মাসুমার ছেলে মোহাম্মদ আবদুল্লাহর পড়ালেখার দায়িত্ব বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিচ্ছেন বলেও পরিবারটিকে জানানো হয়। আবদুল্লাহ উত্তরার দিয়াবাড়ি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ালেখা করে।
এ সময় আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান, উপদেষ্টা আশরাফ উদ্দিন ও আবুল কাশেম, সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন, সদস্য মাসুদ রানা, মুস্তাকিম বিল্লাহ, শাকিল আহমেদ, ফরহাদ আলী সজীব উপস্থিত ছিলেন।
আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি জামিল হোসেন, ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসনাইন নাহিয়ান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মশিউর রহমান ও ওয়াকিল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা রুবেল হোসেন, ঢাকা কলেজ ছাত্রদল নেতা আবদুল্লাহ আল মিসবাহ প্রমুখ।