আগস্ট ৮, ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এর বড় ধাক্কা লেগেছে ভারতের তৈরি পোশাক খাতে। ট্রাম্পের এই শুল্ক ঘোষণার পর থেকে প্রতিদিন আতঙ্কে কাটছে এই খাতের উদ্যোক্তাদের। এরই মধ্যে বৃহৎ মার্কিন ক্রেতারা ক্রয়াদেশ স্থগিত করতে শুরু করেছে। তারা উৎপাদকদের বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মতো কম শুল্কের দেশে কারখানা স্থানান্তরের পরামর্শ দিচ্ছে।
ভারতীয় পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান পার্ল গ্লোবালের কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, তাদের কাছ থেকে গ্যাপ ও কোলসের মতো ব্র্যান্ড পোশাক নিয়ে থাকে। এই মার্কিন ব্র্যান্ডগুলো সোজাসাপ্টা আল্টিমেটাম দিয়েছে, শুল্কের বাড়তি চাপ ভাগ করে নিতে হবে, না হলে উৎপাদন ভারত থেকে সরিয়ে নিতে হবে।
মার্কিন ক্রেতাদের উদ্বেগ কমাতে পার্ল গ্লোবাল তাদের উৎপাদন স্থানান্তর করে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও গুয়াতেমালার ১৭টি কারখানায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, যাতে ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক এড়ানো যায়।
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সব ক্রেতাই আমাদের ফোন করছে। তারা চায় আমরা ভারত থেকে অন্য দেশে স্থানান্তর করি।’
গত এপ্রিল মাসে ট্রাম্পের প্রাথমিক শুল্ক প্রস্তাবে ভারতের ওপর বাংলাদেশের পাশাপাশি ভিয়েতনাম ও চীনের তুলনায় কম হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। সেসময় ভারতীয় ব্যবসায়ীরা আশা করেছিলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী এশীয় পোশাক উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর তুলনায় তারা ১৬ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি বাজারে দ্রুত বিস্তারের সুযোগ পাবেন।
কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের সম্পর্কের অবনতির কারণে এখন ভারতকে দিতে হবে ৫০ শতাংশ শুল্ক, যেখানে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের জন্য তা ২০ শতাংশ এবং চীনের জন্য ৩০ শতাংশ। নয়াদিল্লি ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ককে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ বলেছে।
পার্ল গ্লোবালের প্রায় অর্ধেক ব্যবসা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। কিছু ক্রেতা প্রস্তাব দিয়েছে, যদি শুল্কের বাড়তি চাপ প্রতিষ্ঠানটি ভাগ করে নিতে পারে, তবেই তারা ভারত থেকে পণ্য নেবে। কিন্তু সেটি কাজের কথা নয় বলে জানান পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অবশ্য কোনো ক্রেতার নাম উল্লেখ করেননি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক হতভম্ব করে দিয়েছে মার্কিন পোশাক ক্রেতা ও তাদের ভারতীয় সরবরাহকারীদের। তারা বলছেন, উৎপাদন কার্যক্রম ভারত থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছেন, এমনকি ইথিওপিয়া ও নেপালেও যেতে হতে পারে।
কিছু রপ্তানিকারক জানিয়েছেন, তাদের মার্কিন ক্রেতারা অর্ডার সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে বলেছেন।