ঈদ উল ফিতরের ছুটি চলছে। পরিবার-পরিজনদের নিয়ে ঘোরাঘুরি আর খাওয়া দাওয়া করেই সময় কাটাচ্ছেন রাজধানীর বেশিরভাগ লোক। তারপরও অনেকে আছেন যারা এই সময়টাকেই ভাল বিক্রি করার আশায় দোকান সাজিয়েছেন। এদের কাছে ঈদ সুখ নিয়ে ধরা দেয় না।
ঈদের দ্বিতীয় দিনের রাজধানীর ধানমণ্ডি লেকের পাড়ে এমনই একজন সমেদা বেগম। ঈদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, ‘আল্লাহর সবদিন সমান, বিক্রি ভালো হয় যেদিন সেদিনই আমগো ভালা দিন।’
এভাবে কথা বলতে বলতেই হাতের ফুল দিয়ে মালা বানিয়ে নিচ্ছিলেন সমেদা বেগম।
প্রায় এক যুগ ধরে ছেলে মেয়ে স্বামীসহ ঢাকায় বসবাস করছেন সমেদা বেগম। দুই বছর হলো স্বামীর সাথে ফুল বিক্রিতে যোগ দিয়েছেন। পাঁচ সন্তানের তিনজন লেখাপড়া করছেন, অন্যরা ছোট।
সমেদার কাছে ফুলব্যবসার কথা জানতে চাইলে বিষন্ন হয়ে পড়েন। এরপর বলতে থাকেন, ‘ফুলের দাম অনেক বাড়ছে। সাদা গোলাপের শ’ হিসাবে এখানে ২৮০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হয়। আর লাল গোলাপ দাম বাড়ছে ১৩০ টাকা শ’তে। এছাড়া আড়াই কেজি ঘাসফুল আনতে হয় অনেক টাকায়। লেকে ঈদে অনেক মানুষ আসলেও দাম জিগায় ফুল হাতে নেয়, দাম শুনে চলে যায়। কেউ বলে দাম বেশি আবার কেউ কেউ কিনে। না কিনলে পরিবার নিয়া কেমনে চলুম। বেশি দামে কিনি বেচতে গেলে সমস্যা।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধানমন্ডি লেকের আরেক ফুল ব্যবসায়ী জানান, অনেক দিনের ব্যবসা না করতে পারতেছি না। তেমন লাভ নাই। সারাবছর যাই বেচি ঈদে মানুষ বেশি হয় তাই বেশি করে ফুল আনছিলাম। তবে তেমন বেচতে পারিনাই , ফুলতো পচনশীল বেশিদিন রাখাও যায়না।এজন্য একটু চিন্তায় আছি।”
ঈদের দ্বিতীয় দিন বিকেল বেলা ধানমণ্ডি লেকে ভ্রমণপিপাসুদের প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেল। লেক এলাকার রবীন্দ্র সরোবর, ধানমণ্ডি ৩২, ধানমণ্ডি ৮ নম্বর এলাকায় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। অনেক মানুষ এসেছেন বিনোদনের অন্যতম এই আকর্ষণীয় স্পটে।
এসব জায়গায় নারী, পুরুষ ও বৃদ্ধদের পাশাপাশি শিশুদেরও দেখা গেল। এদের মধ্যে কেউ কেউ আড্ডায় মত্ত, কেউবা খাওয়া-দাওয়ায়। আবার কেউবা লেকের পাশে বসে একান্তে আলাপচারিতায় সময় পার করছেন। অনেকে আবার প্রিয়জনের সাথে মোবাইল ফোনে সেলফি তোলায় ব্যস্ত।
ঈদের দ্বিতীয় দিনেও খাবার বিক্রির দোকানগুলোতে ক্রেতাদের বেশ ভিড় দেখা গেল। খোলামেলা পরিবেশে খাবার রান্না ও পরিবেশন করা হচ্ছে এসব দোকান থেকে।