জুয়েলারি খাতে গোল্ড ব্যাংক একটি আইকনিক চিন্তা: বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

জানুয়ারি ২৬, ২০২২, ০৫:৪৮ এএম

জুয়েলারি খাতে গোল্ড ব্যাংক একটি আইকনিক চিন্তা: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, “আমাদের দেশে একটা গোল্ড ব্যাংক দরকার। দারুন একটা আইকনিক চিন্তা থেকে এটা এসেছে। এটা ঠিক যে বাংলাদেশের যারা স্বর্ণকার, স্বর্ণ শিল্পী যারা, তাদের হাতের কাজ অনেক সুন্দর। এক সময় মসলিন যেমন বিখ্যাত ছিল। সেদিন সংসদে এটাও আলোচনা হয়েছে যে- বাংলাদেশে যারা স্বর্ণের কাজ করে, তাদের হাত অনেক সুন্দর। যা দিয়ে আর্ন্তজাতিক বাজারেও খ্যাতি লাভ করা সম্ভব।”

মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের লেভেল ১৯-এ বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি বাজুসের নতুন কার্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ও সভাপতি হিসাবে বক্তব্য দেন শিল্প উদ্যোক্তা ও বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। সঞ্চালনা করেন বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার আগারওয়ালা।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন,“দেশের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের হাতের কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুনাম পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পৌছে যাবে। আমি বিশ্বাস করি আপনাদের যে যোগ্যতা পরমপরতা দিয়ে সফল হবো। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতিরি উজ্জল ভবিষ্যত কামনা করি। কাজের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী আপনাদের মুখ উজ্জল হোক। বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর একটা কথা বলেছে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসতেন। কিন্তু এই মুহুর্তে আমরা বসতে পারছি না। কিন্তু কাগজপত্র আমরা যেকোনো ভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌছাতে পারি। তারপরে যখন সময় হবে, সুদিন ফিরবে সবাই সবার সামনে বসতে পারবো তখন আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসবো। বললেই তিনি রাজি হয়ে যাবেন।”

ওই অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন,  “বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির আমলে প্রথম গোল্ড রিফাইনারীর অনুমোদন পেয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে যুগান্তকারী সৃষ্টি। টিপু মুনশির মত একজন ব্যবসায়ী বাণিজ্য মন্ত্রী না হলে কারও মাথায় আসতো না যে দেশে একটি গোল্ড রিফাইনারী দরকার। আমি মনে করি দেশের ঘরে ঘরে রিফাইনারী হবে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের স্বর্ণ শিল্পীরা পৃথিবীর মধ্যে বিখ্যাত। পুরো ভারত বর্ষে বাংলাদেশের স্বর্ণ শিল্পীরা কাজ করে। আমাদের জুয়েলারী শিল্প দিয়ে গার্মেন্টস শিল্পকে ছাড়িয়ে যেতে পারবো। তিনি বলেন- আমরা শুধুমাত্র চায়না ও ইউরোপে এক্সপোর্ট করি, আমাদের টাকা রাখার জায়গা থাকবে না। গার্মেন্টেসের দাম কম, স্বর্ণের প্রচুর দাম। এটার ভ্যালু অ্যাডিশন প্রচুর। কিছু কিছু স্বর্ণের ভ্যালু অ্যাডিশন ৩০, ৪০ ও ৫০ শতাংশ। যেখানে আমাদের গার্মেন্টেসের ভ্যালু অ্যাডিশন ৫,৭ ও ৮ শতাংশ।”

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, “বাংলাদেশে রিফাইনারী প্রতিষ্ঠার পর এখন থেকে রপ্তানী করেন। সবার ঘরে ঘরে ইন্ড্রাস্ট্রি করেন। আগামীতে বাংলাদেশ গর্ব করে বলতে পারবে পৃথিবীর বাংলাদেশেও একটি গোল্ড রিফাইনারী আছে। ইটস এ প্রেস্ট্রিজ। আমি মনে করি গোল্ড রিফাইনারী যুগান্তকারী।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি বলছে বাংলাদেশে গোল্ড একচেঞ্জ দরকার, গোল্ড ব্যাংক দরকার। আমি নিশ্চিত বাণিজ্য মন্ত্রীসহ জুয়েলার্স মালিকরা যখন বলবেন, তখন প্রধানমন্ত্রী এক সেকেন্ডও দেরি করবেন না। হবে না কেন সবকিছুর ব্যাংক রয়েছে। গোল্ড ব্যাংক কেন হবে না। গোল্ড একচেঞ্জ কেন হবে না। আপনারা শুধু প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করেন।”

বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, “আমরা জুয়েলারী সেক্টরে আরও উন্নতি করতে চাই। আমি বাণিজ্য মন্ত্রী এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। জুয়েলারী শিল্পে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। এসব প্রতিবন্ধকতা দুর করার জন্য প্রধানমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের একটি যৌথ মিটিং দেওয়ার অনুরোধ করছি। প্রধানমন্ত্রী এবং বাণিজ্য মন্ত্রী থাকলে জুয়েলারী ভাইদের যত সমস্যা আছে বসে সমাধান করতে পারবো। সমস্যা শুধু একটা নয়, সমস্যা অনেকগুলো আছে। একটা সময় মানুষ স্বর্ণ বন্ধুক রেখে ঋণ নিতে পারতো। ১৯৮০ সাল থেকে এই ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। আমি মনে করি এটার জন্য ভালো একটা পলিসি দরকার।”

Link copied!