বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন

দেশে কোনো কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ নেই: অর্থমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক

জুন ৩, ২০২৩, ০২:৪১ এএম

দেশে কোনো কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ নেই: অর্থমন্ত্রী

দেশে কোনো দেশে কোনো কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ নেই: অর্থমন্ত্রী বা অপ্রদর্শিত অর্থ নেই বলে দাবী করেছেন অর্থমন্ত্রী আ. হ. ম. মুস্তফা কামাল।

শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, "গত অর্থবছর বাজেটে কালো টাকা ও অপ্রদর্শিত অর্থ নিয়ে সংসদে কথা বলেছিলাম। কারন আমরা একটা উদ্যোগ নিয়েছিলাম নির্দিষ্ট খাতে নির্দিষ্ট পরিমান কর দিয়ে কালো টাকা ও অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করে নেয়া যাবে।"

তিনি বলেন, "আপনারা জানেন, আপনারাই রিপোর্ট করেছেন, কেউ সে সুযোগ নেয়নি। যেহেতু কেউ আসেনি তাই আমরা মনে করছি কারো অপ্রদর্শিত অর্থ নেই।"

গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি এসময় দীর্ঘ বক্তব্যের কোথাও কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ নিয়ে কিছু বলেন নি।

কালো টাকা ও অপ্রদর্শিত অর্থ নিয়ে দেশের মানুষের কৌতুহল রয়েছে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরাও এ বিষয়টি নিয়ে কৌতুহল প্রকাশ করেছেন।

শুক্রবার বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ বিষয় পরিস্কার করেন অর্থমন্ত্রী।

এদিকে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সরকার যেসব সুযোগ দিয় তার অন্যতম ছিলো বিদেশে অবস্থিত যে কোনো সম্পদের ওপর কর পরিশোধ করা হলে আয়কর বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করবে না। এক্ষেত্রে, বিদেশে অর্জিত স্থাবর সম্পত্তি দেশে না আনা হলে এর ওপর ১৫ শতাংশ কর দিতে হবে। 
এছাড়াও, বিদেশে থাকা অস্থাবর সম্পত্তি দেশে না আনা হলে ১০ শতাংশ এবং নগদ প্রেরিত অর্থের ওপর ৭ শতাংশ হারে কর পরিশোধ করে তা বৈধ করে নেয়া যাবে।

২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন ২০২৩ পর্যন্ত থাকলেও গত ১১ মাসে কেউ এ সুবিধা নেয়নি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ জানায় বছরে বাংলাদেশে দূর্নীতির মাধ্যমে সৃষ্ট কমপক্ষে ১২ বিলিয়ন ডলার সমপরিমানের অর্থ বিদেশে পাচার হয়। এর সবটাই কালো টাকা।

গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে পাচার হচ্ছে ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এসব টাকা চলে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ডসহ ১০টি দেশে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিআইএফইউ) তাদের ২০২২ সালের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, আমদানি-রপ্তানিসহ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কারসাজি আর হুন্ডির আড়ালে অর্থ পাচার হচ্ছে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলে থাকেন, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে উদ্যোগ নেয়ার নামে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া অনৈতিক।

Link copied!