তৈরি পোশাক খাতের ভাবমূর্তি রক্ষা, ব্যবসা পরিচালন ব্যয় কমানো, বাজার সম্প্রসারণ এবং স্বচ্ছ-পরিচ্ছন্ন বিজিএমইএ গড়ে তোলাসহ ১৩ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে ফোরাম। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের পদ্মা হলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ফোরামের পক্ষ থেকে বিজিএমইএ ২০২১-২৩ পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনের ইশেতেহার ঘোষণা করা হয়।
প্যানেলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন হান্নান গ্রুপের চেয়ারম্যান এবিএম সামছুদ্দিন। ফোরামের পক্ষ থেকে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন বিজিএমইএর প্রেসিডেন্ট (২০১৯-২১ মেয়াদে) ও পরিচালক প্রার্থী ড. রুবানা হক। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেছেন ফোরামের আহ্বায়ক আসিফ ইব্রাহিম।
ইশতেহারে অন্য দফাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, রুগ্ন শিল্প ও এক্সিট পলিসি, পণ্যের দাম ও ক্রেতার জবাবদিহিতা, শিল্পের নিরাপত্তা ও নিজস্ব সক্ষমতা, প্রযুক্তি সক্ষমতা, এলডিসি গ্রাজুয়েশন, দক্ষতা ও উদ্ভাবন, সাসটেইনেবিলিটি ও এসডিজি এবং শ্রমিকদের কল্যাণের মাধ্যমে স্বচ্ছ ও পরিচচ্ছন্ন বিজিএমই গঠন করা। ১৩ দফা ইশতেহারকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর প্রথম অংশে শিরোনাম ও বর্তমান ফোরাম পর্ষদের অর্জন, দ্বিতীয় অংশে আছে প্রক্রিয়াধীন কার্যক্রম এবং সবশেষে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।
এক প্রশ্নের জবাবে ইশতেহারের মধ্যে পোশাক খাতের ভাবমূর্তি রক্ষা, কারখানার ব্যবসা পরিচালনায় ব্যয় কমানো এবং বাজার সম্প্রসারণ করাই প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন ফোরামের প্রেসিন্ডেন্ট প্রার্থী এবিএম সামছুদ্দিন।
ড. রুবানা হক বলেন, করোনার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তৈরি পোশাক খাত। আমরা এ খাতের যেকোনো সমস্যা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত। আমাদের প্যানেল সেভাবে গঠন করা হয়েছে। গত ৫ বছরের আমাদের পণ্যের দাম অনেক কমেছে। এ জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। কারণ আমরা নিজেরা নিজেদের দাম কমাই। নির্বাচিত হলে- বিজিএমইএর মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রণে কাজ করবো।
রুবানা হক আরও বলেন, গত দুই বছরে আমাদের অনেক অর্জন আছে এবং অনেকগুলো কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। আগামীতে এ শিল্প টিকে রাখতে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে তার প্রস্তুতি নিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত এক বছর অর্থাৎ করোনার সময়ে দেশের অর্থনীতির প্রাণ পোশাক শিল্পকে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছে। সামনের দিন বিশেষ করে আগামী দুই বছর পোশাক শিল্পের জন্য আরও কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং। ফোরাম সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফোরাম নির্বাচিত হলে ব্যবসার সার্বিক অবস্থা ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ‘সাসটেইনেবল ইন্ডাস্ট্রি’ গড়ে তোলা হবে বলেও জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ফোরাম নির্বাচিত হলে ৩ মাস পরপর পরিচালকেদের পারফরমেন্স মূল্যায়ন করা হবে। বিজিএমইএ ডিরেক্টররা যাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সদস্যদের অনুসন্ধানের জবাব দেয় সেই নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক বিজিএমইএ গড়তে পুরো কার্যক্রমকে ইআরপির আওতায় নিয়ে আসা হবে। বিজিএমইএ-কে শুধু সেবামূলক প্রতিষ্ঠানই নয় সর্বোপরি এটিকে পোশাক মালিকপক্ষের একটি ‘সমন্বিত ফোরাম’ হিসেবে তৈরি করা হবে।
বিজিএমইএ’র সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিইউএফটি ট্রাস্টি বোর্ডকে পুনর্গঠনের প্রস্তাব করা হবে। বিজিএমইএতে ভার্চুয়াল কম্প্লেইন বক্স প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিজিএমএইএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার নিশ্চয়তা দিতে দ্বিবার্ষিক গোপনীয় রিপোর্ট তৈরি করা হবে এবং বৃহৎশিল্পগুলোকে নিয়ে একটি ডিসকাশন গ্রুপ তৈরি করা হবে।