৪০ তম বিসিএস নন-ক্যাডারে সুপারিশের নিয়ম বাতিলের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ৬, ২০২২, ০৯:০৭ পিএম

৪০ তম বিসিএস নন-ক্যাডারে সুপারিশের নিয়ম বাতিলের দাবি

আগারগাঁওয়ে বিসিএসে নন-ক্যাডার পদে সুপারিশের নতুন নিয়ম বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় সরকারি কর্ম কমিশনের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে চাকরিপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, ক্যাডার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত নয়, কিন্তু বিসিএস উত্তীর্ণ অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীদের বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তরের অধিযাচনের ভিত্তিতে প্রাপ্ত নন-ক্যাডার শুন্যপদে সুপারিশ করে থাকে। চলমান বিসিএস নন-ক্যাডার সুপারিশ প্রক্রিয়া পরবর্তী বিসিএস এর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করার পূর্ব পর্যন্ত চলমান ছিল। ২৮তম বিসিএস থেকে ৩৮তম বিসিএস পর্যন্ত এই নিয়মেই পিএসসি নন-ক্যাডার পদে সুপারিশ করে আসছে।

৩৮তম বিসিএস থেকে প্রায় ৩ হাজার ৩০২ জন চাকরিপ্রার্থীকে বর্তমান কমিশনই এই নিয়মে নিয়োগ দেয়। কিন্তু, সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন বিসিএস থেকে নন-ক্যাডার সুপারিশের এই নিয়মে পরিবর্তন এনেছে। এখন থেকে নন-ক্যাডার সুপারিশ করা হবে বিসিএস এর বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী। অর্থাৎ কোন বিসিএস এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত সরাসরি বিসিএস থেকে নিয়োগযোগ্য নন-ক্যাডার শুন্যপদ সংরক্ষণ করে সংখ্যা উল্লেখপূর্বক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পিএসসি তে পাঠাতে হবে এবং পিএসসি ওই বিসিএস এর বিজ্ঞপ্তিতে সেই নন-ক্যাডার পদগুলো উল্লেখ করে পরবর্তীতে উত্তীর্ণ নন-ক্যাডারদের সুপারিশ করবে। এর ফলে বর্তমানে সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার নিয়োগের জন্য যদি বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী বিভাজন করা হয়, তাহলে উত্তীর্ণ ৮হাজার ১৬৬ জন মেধাবী চাকরিপ্রার্থীর অধিকাংশ প্রার্থী সুপারিশ বঞ্চিত হবে, কারণ ৪০তম বিসিএস এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ১১.০৯.২০১৮ তারিখে এবং উক্ত তারিখ পর্যন্ত যত শুন্যপদ ছিল তার প্রায় সব পদেই ৩৭তম বিসিএস ও ৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডারদের সুপারিশ করা হয়েছে। এমনকি ৪০তম বিসিএস এর চূড়ান্ত রেজাল্ট প্রকাশের আগের দিন অর্থাৎ ২৯.০৩.২০২২ তারিখেও ৩৮তম বিসিএস এর প্রার্থীদের ৩৩৭টি পদে সুপারিশ করা হয়েছে। এখন সেই হিসেবে উক্ত তারিখ পর্যন্ত শুন্যপদে সুপারিশ করতে চাইলে আমাদের জন্য পদ নাই বললেই চলে।

করোনার কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪০তম বিসিএস এর প্রার্থীরা। কয়েক দফায় ভাইভা স্থগিত এবং ৪০তম বিসিএস এর মাঝে ৪২তম (বিশেষ) বিসিএসের নিয়োগ কার্যক্রম চলমান থাকায় সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ৪০তম বিসিএস। আমাদের অধিকাংশ প্রার্থীর সরকারি চাকুরির বয়স শেষ।

 তাছাড়া, বর্তমানে বয়সে ৩৯ মাস ছাড় দেওয়া হলেও তা বিসিএসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে। তাই, নন-ক্যাডার নিয়োগের ক্ষেত্রে তারিখওয়ারী বিভাজন করলে আমরা সুপারিশ বঞ্চিত হব।


৪০তম বিসিএস এর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয় ৩০.০৩.২০২২ তারিখে। প্রায় ৩ মাস পর পিএসসি ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার পদের জন্য অনলাইন আবেদনপত্র আহ্বান করে। পিএসসি জুন মাসের ২৬ তারিখ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার হতে সুপারিশ করার লক্ষ্যে শুন্যপদের অধিযাচন/রিকুইজিশন চেয়ে পত্র ইস্যু করে। এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ৪০তম বিসিএস ফরমেটে পিএসসিতে নন-ক্যাডার শুন্যপদের অধিযাচন পাঠানো হয়। হঠাৎ গত ২৩.০৮.২০২২ তারিখে পিএসসি থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ৪০, ৪১, ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী ৪০তম বিসিএসের জন্য আসা সব নন-ক্যাডার শুন্যপদ বিভাজন করে সেই অনুযায়ী পদগুলো পিএসসি তে পাঠানোর জন্য পিএসসি পত্র প্রেরণ করে। এতদিন ধরে আমরা সুপারিশের অপেক্ষায় আছি। চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের ৬ মাস পরে এসে এরকম সিদ্ধান্ত নিলে ৪ বছর ধরে অপেক্ষা করে ১৫০০ নম্বরের দেশের সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি না পেয়ে আমরা এবং আমাদের পরিবার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বো।

এ সময় চাকরি প্রত্যাশীরা চার দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হলো কমিশন কর্তৃক ৪০তম বিসিএস বিজ্ঞপ্তির তারিখ ওয়ারী সুপারিশের এই বেকারবিরুদ্ধ এবং একইসাথে সরকারের নীতি বিরুদ্ধ অযাচিত সিদ্ধান্ত বাতিল।

 ৪০তম বিসিএস ননক্যাডার এর অনুকূলে পিএসসি কর্তৃক প্রদত্ত অধিযাচন পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাপ্ত সকল পদসমূহ ৪০তম বিসিএস ননক্যাডারে উত্তীর্ণদের থেকে সুপারিশকরণ।

পূর্বতন বিসিএস গুলো (৩৫,৩৬,৩৭,৩৮) থেকে নন-ক্যাডারে সুপারিশকরণের অনুসৃত প্রক্রিয়া ৪০তম বিসিএস এর ক্ষেত্রেও অনুসরন করা।

 ৪০তম ননক্যাডারে সুপারিশকরণ প্রক্রিয়া পরবর্তী বিসিএস (৪১তম বিসিএস) এর চূড়ান্ত ফলাফল প্রদানের পূর্ব তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত রেখে ৪০তম বিসিএস ননক্যাডারে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের থেকে সুপারিশকরণ।

Link copied!