‘জিপিএ-৫ মানে জেলখানার ৫ নম্বর সেল’

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ৩০, ২০২১, ১০:৪৮ পিএম

‘জিপিএ-৫ মানে জেলখানার ৫ নম্বর সেল’

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ কয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রকাশ হওয়া এই ফলাফলে মোট ২২ লাখ ৪০ হাজার ৩৯৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন শিক্ষার্থী।

বর্তমান সময়ে পরিবারের চাপে অনেকে জিপিএ-৫ পেতে পড়াশোনা করে। ফলে সৃজনশীল বিষয়ে তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এমতাবস্থায় জিপিএ-৫ পাওয়াকে ‘জিপিএ-৫ মানে জেলখানার ৫ নম্বর সেল!’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির অনলাইন নিউজ পোর্টাল আরটিভিঅনলাইন ডটকম’কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ওই সাক্ষাতকারে মুস্তাফা মনোয়ার বলেন, ''আগে তো খেলাধুলা নিয়ে ‘এই যে খালি খেলেই বেড়ায়’ বলে দিত মার। আর এখন তো যারা ক্রিকেট খেলছে, তাদের নিয়ে নাচানাচি করে। অনেক পয়সা করছে তো, তাই ক্রিকেটে এখন আর কোনো অসুবিধা নেই। এখন বলে, ‘সবাই জিপিএ-৫ পাবি, যা পড়’। এই জিপিএ মানে জেলখানা। জিপিএ-৫ মানে জেলখানার ৫ নম্বর সেল! ওখানে থাকো। আমাদের পয়সার দরকারটা কী? আমি বেশি পাইনি। অল্প পেয়েছি। চলে যাচ্ছে তো। এখনও নেশার মধ্যে আছি। এখনও বাচ্চাদের জন্য কাজ করছি, বড়দের জন্য করছি। এটা বিশাল নেশা।''

জিপিএ-৫ পেতে পড়াশোনা করার ফলে শিক্ষার্থীরা সৃজনশীল বিষয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে উল্লেখ করে মুস্তাফা মনোয়ার আরও বলেন, “

মতামত জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, “আসলে পুরো পড়াটা যদি সৃজনশীল হতো, তাহলে আটকে রাখা যেত না। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, এ ধরনের পড়া হলো একটা ফ্যাক্টরির বস্তার ওপর মার্কা মারা ছাপ। এই কোম্পানির এই জিনিস। এ প্লাস দরকার কী তোমার? অন্য কিছু পেলেই তো হয়। পরিবারের চাপ, এ প্লাস- পুরো সোসাইটি মার্কা-মারার দিকে চলে যাচ্ছে। পৃথিবীর সব বড় মানুষকে দেখো, এ প্লাস কে পেয়েছে খুঁজে বের করো। কিংবা একেবারে ফার্স্ট হয়েছে। খুবই কম।”

বাংলাদেশ টেলিভিশনে শিশুদের জন্য প্রতিযোগিতামূলক প্রতিভা বিকাশের ‘নতুন কুঁড়ি’র মতো সৃজনশীল অনুষ্ঠানের এই রূপকার আরও বলেন, “পৃথিবীতে এ+ পাওয়া বড় মানুষ নেই। ওরা চাকরি করে, গোলামি করে। ব্যস! বড় মানুষ না। তবে চাকরি পাবে। তোমার জীবন যদি অন্যের গোলামি করা চাকরির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, তুমি সৃজনশীল কিছুই করবে না। তোমার ছবি আঁকতে ভালো লাগে, এটা তো তোমার নিজের জন্য নয়, ছবিটা কি তুমি বাক্সে তুলে রাখবে? না। তুমি নিশ্চয়ই দেখবে। দেখাবে, আর ভালো লাগবে। তোমাদের প্রকৃতিকে ভালো লেগেছে। সেটা কি তোমরা প্রকাশ করবে না?”

Link copied!