আগস্ট ১৮, ২০২৪, ০৯:৪৩ এএম
দীর্ঘ ১ মাস বন্ধ থাকার পর আজ দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা বৈষম্যের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে গত ১৬ জুলাই দেশের সব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে গত ১৫ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক নির্দেশনায় রোববার (১৮ আগস্ট) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা জানায়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুললেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিশেষ করে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা স্কুলে স্কুলে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। স্কুলের গেটে জোরদার করা হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা। আইডি কার্ড ছাড়া কোনও শিক্ষার্থী স্কুলে যেন প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য কঠোর নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্কুলের শিক্ষার্থী পরিবহনে যানবাহনগুলোকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অভিভাবকদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় তার সন্তানকে স্কুলে পাঠানোর জন্য এসএমএস দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে রোববার খুললেও ক্লাস হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। কারণ শীর্ষ পদগুলো শূন্য থাকায় ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্তই নিতে পারেনি কিছু বিশ্ববিদ্যালয়। আবার ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ শিক্ষার্থীদের সব দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়ায় তারা ক্লাসে ফিরবেন কি না সেটা নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যদিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হবে কি না সেটা নিয়ে কোনও নির্দেশনা আসেনি। উপাচার্যের পদত্যাগের পর মূলত স্থবির রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগরসহ আরও ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়েও দেখা দিয়েছে একই অবস্থা।
সর্বজনীন প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলনে ১ জুলাই থেকে বন্ধ হয়ে যায় দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাস-পরীক্ষা। অন্যদিকে সরকারি চাকরিতে কোটা বৈষম্যের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নিলে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এরপর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৭ আগস্ট থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা জানায় সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুবই কম ছিল। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর জানায়, গত ৭ আগস্ট থেকে অনেক প্রতিষ্ঠানে ক্লাস হলেও উপস্থিতি কম ছিল। অনেকের মধ্যে আতঙ্ক ও নিরাপত্তার শঙ্কা ছিল। পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হয়ে আসায় রোববার থেকে স্কুল-কলেজে যথারীতি ক্লাস হবে।