রাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ

রাবি প্রতিনিধি

মার্চ ১২, ২০২৪, ১০:৩৬ এএম

রাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ

ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শ্রেণীকক্ষে নারী শিক্ষার্থীদের হিজাব-নিকাব খুলতে বাধ্য করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সোমবার বিকেলে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন পালন করেছে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এসময় অভিযুক্ত শিক্ষককে ‍‍`সকল বর্ষের পাঠদান থেকে অব্যহতি‍‍` এবং ‍‍`অপরাধ বিবেচনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি‍‍`র দাবি জানায় তারা। এছাড়াও দুই কার্যদিবসের মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না হলে ক্লাস বর্জন করবে বলে জানান মানববন্ধনরত শিক্ষার্থীরা।

এ কর্মসূচিতে তাদের হাতে ‍‍`বাবার মতো শিক্ষকের এ কেমন আচরণ, ক্লাসে পর্দার অধিকার হরণকারীর দৃষ্টান্তমূলক শান্তি চাই, নিকাব নিয়ে হয়রানি মানছি না মানবো না, হিজাব আমার ব্যক্তি স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতায় চলবে না কোনো হস্তক্ষেপ, নিকাব নিয়ে আর নয় কোনো কুটুক্তি‍‍` প্রভৃতি সম্বলিত প্লাকার্ড দেখা যায়।

অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজুর রহমান। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ক্লাসে নারী শিক্ষার্থীদের হিজাব-নিকাব খুলতে বাধ্য করে ‍‍`ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত‍‍` এবং মেয়েদের মেসেঞ্জারে ‍‍`অপ্রীতিকর বার্তা‍‍` প্রেরণ করে হয়রানি করতেন তিনি।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি ক্লাসে গরম লাগার কারণে একটা ছোট কাগজ দিয়ে নিজেকে বাতাস করছিলাম। তখন স্যার আমাকে দাঁড় করালেন এবং বললেন এটা কি করছো? এটা তো খুবই দৃষ্টিকটু। এরকম প্যাকেটের মত পোশাক পরে আসলে তো গরম লাগবেই! তোমার গরম তোমার কাছেই রাখো।

তিনি আরো বলেন, আরেকদিন আমার বান্ধবী জোরে প্রেজেন্ট দিয়েছে, তার পরেও তিনি বলেন আমি শুনি নাই। তখন তাকে জোরপূর্বক নিকাব খুলিয়েছে। আমার আরেক বান্ধবীকে নিকাব নিয়ে কটুক্তি করেছে। বলেছে এটা কেমন? এর মাধ্যমে তিনি শুধু নিকাব নিয়ে কটুক্তি করেনি, সাথে সাথে পুরো ইসলামের সংস্কৃতি নিয়ে কটুক্তি করেছেন।

একই বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আজিজুর রহমান বলেন, আমাদের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটা রাষ্ট্রে মুসলিম অধ্যুষিত একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজের মতো ডিপার্টমেন্টে যেখানে ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করা হয়, সেখানে যদি পর্দা নিয়ে কটুক্তি করা হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য ডিপার্টমেন্টগুলোর কী অবস্থা এটা আমাদের ভাবা দরকার। আজকে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি আমাদের বান্ধবী, বড়বোন ছোটবোনদের পর্দার অধিকার নিয়ে কটুক্তি করার প্রতিবাদে। আমরা ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, হিজাব পড়ার আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা রয়েছে। এই হিজাব নিয়ে কটুক্তি করে ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করা চলবে না।

বিভাগের মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী জুবায়ের বলেন, হাফিজুর রহমান ইসলামিক স্টাডিজের মতো বিভাগের শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও আমাদের বোনকে হিজাব খোলার মতো নিকৃষ্টমূলক কথা বলে। তিনি ক্লাসে এসে ছাত্রীদেরকে বলেন তোমরা কেন হিজাব পরে আসো? তোমরা কি স্মার্ট হতে শিখনি!

জুবায়ের আরো বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও সিনিয়র শিক্ষকদের নিকট অনুরোধ করছি তাঁরা যেন হাফিজুর রহমানকে ডিপার্টমেন্ট থেকে বহিষ্কার করেন।তার জন্য আমাদের ডিপার্টমেন্টের মানসম্মানের ক্ষতি হোক আমরা তা চায় না।

সালাউদ্দিন আম্মারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে এসময় বিভাগের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এ  উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!