সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ সাত দফা দাবিতে টানা ৫ দিন ধরে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে চলছে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের কর্মসূচি। এবার বাঁশ দিয়ে তিতুমীর কলেজের সামনের দুই পাশের রাস্তা আটকে দিলেন তারা। খবর সমকাল।
রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে রাস্তা দুটি আটকে দেন শিক্ষার্থীরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে গত ২৯ জানুয়ারি থেকে তিতুমীর কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনে অনশন শুরু করেন। এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ায় গতকাল দু’জনসহ এখন পর্যন্ত সাতজনকে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি দুই শিক্ষার্থী হলেন– উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের মফিজুল ইসলাম ও বাংলা বিভাগের আবু নাঈম। এ ছাড়া অনশনরত ৯ শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছে। তাদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। একজন চিকিৎসক ও দু’জন নার্সকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধ করার ফলে মহাখালী থেকে গুলশান এবং গুলশান থেকে মহাখালী পর্যন্ত রাস্তার যান চলাচল সম্পন্ন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা দাবি পক্ষে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে না না স্লোগান দিচ্ছেন তারা।
এর আগে গত শুক্রবারও তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়কটি অবরোধ করেন। সেদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তবে গতকাল বিকেল ৪টার মধ্যে দাবি মানা না হলে আবার সড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।
আজও আমরণ অনশনের পাশাপাশি ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচি পালন করবেন তারা। এই কর্মসূচির আওতায় ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা হবে। অনির্দিষ্টকালের জন্য এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বিশ্ব ইজতেমা ও আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে সকাল ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি শিথিল থাকবে।
শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবিগুলো হলো—
১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।
২. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
৩. শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করতে হবে।
৪. ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুইটি বিষয় `আইন` এবং `জার্নালিজম` বিষয় সংযোজন করতে হবে।
৫. একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
৬. শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিত করতে হবে।
৭. আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ করতে হবে।