ব্রাহ্ম সমাজ : ধর্মীয় গোঁড়ামি অবসান করতে যার উৎপত্তি

অভিশ্রুতি শাস্ত্রী

নভেম্বর ১০, ২০২৩, ০৩:২২ পিএম

ব্রাহ্ম সমাজ : ধর্মীয় গোঁড়ামি অবসান করতে যার উৎপত্তি

ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

ঠিক প্রতি রবিবার বিশেষ উপাসনা করেন শ্রাবণী গুহ রায়। তাঁর নাম শুনে অনেকটা সনাতনী কিংবা হিন্দু ধর্মালম্বী মনে হলেও আসলে তাঁরা ব্রাহ্ম ধর্ম অনুসারী। ব্রাহ্ম সমাজের ব্রহ্ম সঙ্গীত গায়িকা তিনি । ধর্মের প্রতি অনুরাগ থেকেই প্রতি রবিবার সন্ধ্যায় পাঠ করেন শ্লোক এবং ব্রহ্ম সঙ্গীত। 

ঔঁ এর অর্থ এক বা অদ্বিতীয়, অর্থাৎ একঈশ্বর বাদে বিশ্বাসী। তবে ঔঁ চিহ্ন থাকলেও এটা কিন্তু কোনো সনাতনী মন্দির নয় বরং ব্রাহ্ম সমাজের মন্দির। ব্রাহ্ম সমাজ সনাতনী ধর্মের সংস্কারকৃত একটি সমাজ । রাজা রামমোহন রায় তৎকালীন সময়ের ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং সতীদাহের মতো প্রথা বিলুপ্ত করতেই এই ব্রাহ্ম সমাজের উৎপত্তি।

শাঁখা সিঁদুর পরলেও সনাতনী নয় তারা। সেই সাথে তাদের ঈশ্বর আরাধনার ধরণ ও ভিন্ন। বেদের শ্লোক পড়লেও তা মন্দিরে পাঠকৃত মন্ত্রের মতো করে পড়া হয় না । কীর্তনের বদলে গাওয়া হয় রবি ঠাকুরের সৃষ্টি করা ব্রাহ্ম সঙ্গীত । 

ব্রাহ্ম সমাজের একঈশ্বর বাদী এই মন্দিরে ঔঁ চিহ্ন ছাড়া রাখা হয় না কোনো সাকার রুপে দেব দেবীর মূর্তি।

ব্রাহ্ম আচার্য দীপক পালের মতে , মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ কাটানো এবং হিন্দু সমাজের ধর্মীয় গোঁড়ামির অবসান ঘটানোর জন্য ব্রাহ্ম সমাজের উৎপত্তি হয়েছিলো। মন্দিরে শুধু ঔ প্রতীক রাখার ক্ষেত্রে জানান ঈশ্বর এক এবং অদ্বিতীয়। তার কোনো রুপ , বর্ণ থাকতে পারে না। 

বই পুস্তকে রাজা রামমোহন রায় কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্ম ধর্ম সম্পর্কে জানলেও বর্তমানে এই ধর্মের যে অস্তিত্ব আছে সে বিষয়ে জানা নেই অনেকের।

উপাসনার ক্ষেত্রেও রয়েছে ভিন্নতা। সপ্তাহে রবিবার সকাল ও সন্ধ্যায় হয় উপাসনা । 

সময় পাল্টেছে সমাজও বদলেছে কিন্তু জন্মসূত্রে ব্রাহ্ম বা অ-আনুষ্ঠানিক ব্রাহ্মের সংখ্যা বাড়েনি ।

ব্রাহ্ম সমাজের সাধারণ সম্পাদক রণবীর পাল বলেন, দীক্ষা নিয়ে তেমন আগ্ৰহ দেখিনি। তবে ব্রাহ্ম সমাজ প্রীতির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে । ব্রাহ্ম সমাজের জ্ঞাতিগোষ্ঠীর ব্যাপারে রণবীর পাল খানিকটা ধোঁয়াশা রাখলেও পাটুয়াটুলিতে গোটা কয়েক ঘর ছাড়া দেখা যায়নি নতুন কোনো ব্রাক্ষধর্মীকে । 

Link copied!