দেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা। কিন্তু যথাযথ চিকিৎসা ও আনুসাঙ্গিক সেবা সম্পন্ন হবার আগেই অনেক রোগী হাসপাতাল বিমুখ হয়ে পড়ছে। যার ফলে ক্যান্সারে মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বছরে ক্যান্সারে মারা যাওয়া ৭৫ শতাংশ রোগী তাদের চিকিৎসা সম্পূর্ণ করেনি।
৩০ শতাংশ চিকিৎসা করাচ্ছে না
ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, রোগীদের করোনা হওয়ায় ক্যানসার চিকিৎসা শেষ না করেই ৩০ শতাংশ রোগী বাড়ি ফিরছেন। চিকিৎসা শেষ না করা রোগীদের ৭৫ শতাংশই গত এক বছরের মধ্যে মারা গেছেন বলে ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের করা একটি গবেষণায় উঠে আসছে।
বছরে নতুন দেড় লাখ ক্যান্সার রোগী
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান গ্লোবোক্যানের সর্বশেষ হিসাব বলছে, বাংলাদেশে বর্তমানে ১৫ লাখ ক্যানসার রোগী রয়েছে। এ ছাড়া দেশে প্রতিবছর ১ থেকে দেড় লাখ মানুষের নতুন করে ক্যানসার শনাক্ত হচ্ছে। একইসঙ্গে করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ক্যানসার চিকিৎসা বন্ধ থাকায় রোগীর শরীরে জটিলতা বাড়ছে। করোনার মধ্যে ৫০ শতাংশ রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে না।
প্রতিবছর ১ লাখ ৯ হাজার রোগী মারা যায়। সেই হিসাবে গত দুই বছরে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে ২ লাখ ১৮ হাজার মানুষ মারা গেছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে করোনার মধ্যে ২০ থেকে ৩০ গুণ বেশি ক্যানসারের মৃত্যু হচ্ছে। এছাড়া ক্যানসার রোগীরা করোনা আক্রান্ত হলে মৃত্যু কয়েকগুণ বেশি হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে দেশে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে কত জন মারা যাচ্ছে এমন তথ্য না থাকলেও এক বছরে ৬৭ শতাংশ অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটের সহকারী অধ্যাপক ড. হাসান শাহরিয়ার কল্লোল বলেন, অসেচতনায় ক্যান্সার রোগ বিস্তার করছে। দেখা যায় যে রোগীরা বেশিরভাগ শেষ পর্যায়ে এসে ক্যান্সারের চিকিৎসা করান। তখন অনেকেই রোগীকে চিকিৎসা না করানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।
সকল বিভাগে হচ্ছে না চিকিৎসা
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে ক্যানসার চিকিৎসায় সরকারি-বেসরকারি মিলে ২৬টি প্রতিষ্ঠান থাকলেও সমন্বিত ক্যানসার চিকিৎসা সুযোগ রয়েছে মাত্র জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটে। এই হাসপাতালে বছরে ৩০ হাজার রোগী চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বাকি ১ লাখ ২০ হাজার রোগী ২৫টা কেন্দ্রে সেবা নিচ্ছে। সেই রোগীদের চিকিৎসার জন্য তেমন সুযোগ-সুবিধা নেই। সম্প্রতি দেশে ক্যানসার চিকিৎসায় আট বিভাগের ৮টি ক্যানসার ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। আগামী তিন-চার বছর পর হাসপাতালগুলো চিকিৎসাসেবার উপযোগী হবে।