ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩, ০১:১৫ পিএম
গত ২০ বছরের ইতিহাসে মাতৃত্বজনিত মৃত্যু এক-তৃতীয়াংশ কমলেও গর্ভাবস্থা বা প্রসবজনিত জটিলতার কারণে প্রতি দুই মিনিটে একজন নারীর মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্বে মাতৃমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তবে ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এই হার মূলত স্থবির ছিল। কিন্তু এই সময়ে কিছু অঞ্চলে তা বাড়তে দেখা গেছে।
জাতিসংঘ জানায়, গত ২০ বছরে বিশ্বে গড় মাতৃত্বজনিত মৃত্যুহার ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। ২০০০ সালে যেখানে এক লাখ সন্তান জন্মদানের ঘটনায় ৩৩৯ জন নারীর মৃত্যু ঘটত, ২০২০ সালে এসে তা দাঁড়িয়েছে ২২৩ জনে।
সে অনুযায়ী, গর্ভাবস্থা বা প্রসবজনিত জটিলতায় ২০২০ সালে বিশ্বে প্রতিদিন প্রায় ৮০০ জন নারীর মৃত্যু হয়। অর্থাৎ প্রতি ২ মিনিটে প্রায় একজন নারীর মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, ‘গর্ভধারণ যেখানে একজন নারীর সবচেয়ে ইতিবাচক অভিজ্ঞতার সময়, সেখানে এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি নারীর জন্য এটিই সবচেয়ে আতঙ্কের অভিজ্ঞতা হিসেবে রয়ে গেছে। নারী ও মেয়েদের গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসা নিশ্চিত করা জরুরি।’
তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস আরও বলেন, মাতৃমৃত্যু নিয়ে জাতিসংঘের নতুন এই পরিসংখ্যান প্রত্যেক নারী-মেয়ের জরুরি সময়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করার অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনীয়তা কথা সামনে এনেছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে জাতিসংঘের আটটি অঞ্চলের মধ্যে মাত্র দুটিতে মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে।
এগুলো হলো— অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড এবং মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড অঞ্চলে মাতৃমৃত্যু ৩৫ শতাংশ কমেছে। মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় কমেছে ১৬ শতাংশ।
তবে এক্ষেত্রে সাফল্য দেখিয়েছে বেলারুশ। দেশটিতে মাতৃত্বজনিত মৃত্যু ৯৫.৫ শতাংশ। আর গর্ভধারণ ও সন্তান প্রসব সংক্রান্ত জটিলতায় সবচেয়ে বেশি নারীর মৃত্যু হয়েছে ভেনিজুয়েলায়। অন্যদিকে ২০০০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রেও ব্যাপকহারে বেড়েছে মাতৃত্বজনিত মৃত্যু।
জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের প্রধান নাতালিয়া কানেম বলেন, নারীদের এই মৃত্যুহার মেনে নেওয়া যায় না। এই প্রেক্ষাপটে পরিবার পরিকল্পনা খাতে জরুরিভাবে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি ধাত্রীদের ঘাটতি পূরণের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি।