স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এক বিরলতম ঘটনা ঘটতে চলেছে। স্বাধীনতার পর দেশের ফাঁসির কাষ্ঠে এই প্রথমবার কোন নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে যাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের মথুরা জেলে এই সাজা কার্যকর হবে। এখনও ফাঁসির দিন চূড়ান্ত হয়নি, তবে প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে।
এর আগে গত দেড়শো বছরের ইতিহাসে কোনো মহিলাকে এ পর্যন্ত ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে হয়নি। সেই ইতিহাস এবার ভেঙে দিতে চলেছেন আমরোহার বাসিন্দা শবনম। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তার ফাঁসির আদেশ কার্যকর হতে চলেছে।
আজ থেকে প্রায় ১২ বছর আগের একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শবনমের বিরুদ্ধে এমন শাস্তির রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর অবশ্য তার ক্ষমা প্রার্থনার পিটিশনও রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছিলো। তবে রাষ্ট্রপতি সেই পিটিশন খারিজ করে দিয়েছেন। এরফলে সুপ্রিম কোর্টের ফাঁসির আদেশই বহাল রয়েছে। এখন শুধু তা ফাঁসির সাজা কার্যকরের অপেক্ষায়।
প্রায় দেড়শো বছর আগে মথুরা জেলে মহিলাদের ফাঁসি দেওয়ার জন্য আলাদা কক্ষ তৈরি করা হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে কক্ষটি ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়নি। ১৯৯৮ সালের ৬ এপ্রিল রামশ্রী নামে এক মহিলার ফাঁসির সাজা দেয় আদালত। কিন্তু তিনি জেলেই সন্তানের জন্ম দেওয়ায় সেই সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করে দেওয়া হয়। ফলে স্বাধীনতার পর প্রথম মহিলা হিসেবে ফাঁসি হচ্ছে শবনমেরই।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে প্রেমিককে সাথে নিয়ে নিজের পরিবারের ৭ জন সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করে শবনম। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলাটি “বিরলের মধ্যেও বিরলতম ঘটনা” হিসেবে উল্লেখ করে রায় দেন উচ্চ আদালত। আদালতের রায় অনুসারে মথুরা জেলে তাকে ফাঁসি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মথুরা জেলের সুপারিনটেনডেন্ট শৈলেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, '‘পরোয়ানা জারি হলেই ফাঁসি দেওয়া হবে। দিন ঠিক না হলেও, ফাঁসি দেওয়ার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। বিহারের বক্সার জেলা থেকে ফাঁসির দড়িও আনা হয়েছে। শবনমকে ফাঁসি দেবেন মীরাটের পবন জল্লাদ।'
উল্লেখ্য, এর আগে ভারতে নির্ভয়া কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদেরও ফাঁসি কার্য যকর করেছেন পবন জল্লাদ। তিনি ভারতবর্ষের প্রথম মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মহিলা অপরাধীকেও ফাসিঁর কাষ্ঠে ঝোলাতে চলেছেন।