ভারতের ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৮৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানা গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত এক হাজার মানুষ। নিহতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা। যে কারণে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটলো তা নিয়ে প্রাথমিক প্রতিবেদন দিলেন রেল কর্মকর্তারা।
রেল কর্মকর্তারা বলছেন সিগন্যালের ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর একটি যৌথ পরিদর্শন রিপোর্টে সিগন্যালের ত্রুটির কথা জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘আপ মেইন লাইনে সবুজ সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ট্রেনটি সেই লাইনে ঢোকেনি। ট্রেন ঢুকেছিল লুপ লাইনে। সেখানে আগে থেকে একটি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। তার সাথে সংঘর্ষে করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়।’
রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়, ‘এর মাঝে ডাউন লাইন দিয়ে বালেশ্বরের দিকে যাচ্ছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনের দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়।’
কিন্তু মেইন লাইনে সবুজ সিগন্যাল পাওয়া সত্ত্বেও করমণ্ডল এক্সপ্রেস কীভাবে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
বিস্তারিত তদন্তের পর দুর্ঘটনার কারণ আরও স্পষ্টভাবে জানানো যাবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুপুর সোয়া ৩টা নাগাদ হাওড়ার অদূরে শালিমার স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করেছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রায় চার ঘণ্টা পরে ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ বগির ট্রেনটি।
দুর্ঘটনাস্থল পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে আর ওড়িশার ভুবনেশ্বর থেকে ১৭০ কিলোমিটার উত্তরে।
জানা গেছে, কলকাতাগামী বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি ডাউন লাইনে ছিল। সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে ওড়িশার বাহানগাবাজার এলাকায় এই ট্রেনের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এর মিনিট পাঁচেক পর আপ লাইন দিয়ে ওই এলাকা পার হচ্ছিল চেন্নাইগামী শালিমার–চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি। হঠাৎ এই ট্রেনের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়।
এ সময় পাশের একটি লাইনে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল মালবাহী একটি ট্রেন। করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে প্রথমে বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগিতে আঘাত করে। পরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনের কয়েকটি বগি আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা পণ্যবাহী ট্রেনের ওপর গিয়ে আছড়ে পড়ে।