সালমান রুশদির ওপর হামলাকারী পাচ্ছেন ইরানে জমি পুরস্কার!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩, ০২:৫৫ এএম

সালমান রুশদির ওপর হামলাকারী পাচ্ছেন ইরানে জমি পুরস্কার!

গত বছর নিউইয়র্কের এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির (৭৫) ওপর হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রশংসা করে তাকে পুরস্কৃত করছে ইরানের একটি ফাউন্ডেশন। পুরস্কার হিসেবে হামলাকারীকে এক হাজার বর্গমিটার কৃষিজমি দিচ্ছে ফাউন্ডেশনটি। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি মঙ্গলবার তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এ কথা জানিয়েছে।

গতবছর অগাস্টে শাটাকোয়া ইনস্টিটিউটের এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বুকারজয়ী এই লেখক। যখন তাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তখনই এক লোক দৌঁড়ে স্টেজে উঠে ছুরি নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়।

রুশদির ঘাড়ে ও শরীরে জখম হয়েছে বলে নিউ ইয়র্ক পুলিশ জানায়। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি ছয়সপ্তাহ চিকিৎসাধীন ছিলেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, তার ঘাড়ে ও পেটে অন্তত একবার করে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। পরবর্তীতে রুশদি একচোখের দৃষ্টিশক্তিও হারান।

১৯৮৮ সালে প্রকাশিত স্যাটানিক ভার্সেস উপন্যাসের জন্য তিন দশকের বেশি সময় ধরে হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন এর লেখক রুশদি। তাঁর এই উপন্যাস বিশ্বজুড়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল এবং বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল।

রুশদির ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ হাদি মাতার (২৪) নামের এক সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনে। সেই ব্যক্তি একজন শিয়া মুসলিম আমেরিকান এবং নিউজার্সির ফেয়ারভিউয়ের বাসিন্দা। তিনি একটি পাস কিনে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেছিলেন এবং দর্শক সারি থেকে উঠে এসেছিলেন। হামলার ঘটনায় হাদি দোষ অস্বীকার করেছেন।

মঙ্গলবার ইরানের ‘ফাউন্ডেশন টু ইমপ্লিমেন্ট ইমাম খামেনি’স ফতোয়াস’ এর সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইসমাইল জারেই বলেছেন, রুশদির একটি চোখ অন্ধ করে এবং হাত অকেজো করে দিয়ে যিনি মুসলিমদেরকে খুশী করেছেন, তাঁর এই সাহসী কাজের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে তাকে ধন্যবাদ জানাই। রুশদি এখন জীবন্মৃত একজন মানুষের চেয়ে বেশি কিছু না। এই বীরোচিত কাজ যিনি করেছেন তার সম্মানার্থে তাঁকে কিংবা তার আইনি কোনও প্রতিনিধিকে প্রায় ১ হাজার বর্গমিটার কৃষিজমি দান করা হবে।

১৯৯৮ সালে ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি লেখক সালমান রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া ঘোষণার ৩৩ বছর পর তাঁর ওপর ছুরি হামলার ঘটনা ঘটল। ওই সময় ইরান রুশদির মাথার দাম ৩০ লাখ ডলার ঘোষণা করে। এরপর প্রায় দশ বছর একপ্রকার পালিয়ে থাকতে হয়েছিল রুশদিকে। তাঁর স্যাটানিক ভার্সেস উপন্যাসকে কিছু মুসলিম ধর্মাবমাননা হিসাবেই দেখে থাকে।

রুশদির ওপর হামলাকারী হাদি মাতার এসেছেন দক্ষিণ লেবাননের ইয়ারুন শহর থেকে। এনবিসি নিউ ইয়র্ক পত্রিকা জানায়, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা হাদি মাতারের স্যোশাল মিডিয়া একাউন্ট যাচাই করে দেখেছে, এই ব্যক্তি শিয়া উগ্রপন্থা এবং ইরানের রেভল্যুশনারী গার্ডের মতের অনুসারী।

রয়টার্স

 

Link copied!