আগস্ট ২৪, ২০২৫, ০৭:০০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আপনারা দেখেছেন, কীভাবে বিএনপির একজন নেত্রী বলছেন, আমরা চাইলে এখানে গুন্ডা নিয়ে আসতে পারতাম। অর্থাৎ গুন্ডার পৃষ্ঠপোষকতা উনারা দিয়ে আসছেন। আমরা দেখেছি, নির্বাচন কমিশনের বাইরে লাঠিসোটা নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশন, প্রধান নির্বাচন কমিশন অফিসের এই অবস্থা। সারা দেশে এই বিএনপির যারা রয়েছে, এই গুন্ডাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে, তারা কীভাবে ভোটকেন্দ্র দখল করবে, সেটির আজকে টেস্ট ম্যাচ হয়ে গিয়েছে।’
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে আজ রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের শুনানি চলাকালে হাতাহাতি ও মারামারি হয়। এর জেরে বিকেলে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, বিএনপির আওয়ামী বিষয়ক সম্পাদক রয়েছেন অনেকেই, যারা আওয়ামী লীগ থেকে বেশি আওয়ামী লীগ। তাদের মধ্যে অন্যতম রুমিন ফারহানা।
হাসনাত বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী, আওয়ামী লীগের ফ্ল্যাটভোগী এবং যারা গুন্ডা দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে ঠান্ডা করে দিতে চায়, যারা একটা প্রেসক্রিপটিভ ইলেকশনের দিকে আবার যেতে চায়। আমরা এই বিএনপির আওয়ামী বিষয়ক সম্পাদকদের বলব, আমরা আপনারা `২৪ পরবর্তী জনগণের পালসকে বুঝুন। নয়তো আবার বাংলাদেশ একটি সংকটের দিকে যাবে।’
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে সবসময় প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন জানিয়ে হাসনাত বলেন, ‘আমরা পুলিশকে দেখেছি এখানে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। পুলিশ আমাদের নেতা-কর্মীদের নির্বাচন কমিশনে ঢুকতে বাধা দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ফ্রি এক্সিট দিয়েছে। এই নির্বাচন কমিশন কতিপয় পার্টির পার্টি অফিস হয়ে গিয়েছে।’
নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে হাসনাত আরও বলেন, ‘আমরা একটি গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। বাংলাদেশের মানুষ গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অপেক্ষা করছে। তারা আবার গুন্ডাতন্ত্রের দিকে যেতে চায় না। তারা আবার ১/১১-এর মঞ্চস্থের জন্য অপেক্ষা করছে না। সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে হলে নির্বাচন কমিশনকে আমরা বস্তুনিষ্ঠ পেশাদারিত্বের ভূমিকায় দেখতে চাই। নির্বাচন কমিশন যেভাবে দলকানা, একটি দলের প্রতি, একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে যেভাবে নির্লজ্জের মতো কাজ করছে, সেটি আমরা যে নির্বাচনমুখী হচ্ছি, তার পথে অন্তরায় বলে মনে করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ধরে নেব, তাদের কার্যক্রম হচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ডের নির্দেশনা। আজ নির্বাচন কমিশনে যে ঘটনাটি ঘটেছে, সে বিষয়ে বিএনপি কী অবস্থান নেয়, আমরা সেদিকে নজর রাখব।’
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আতাউল্লাহ অভিযোগ করেন, শুনানিতে অংশ নিতে এলে তাকে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘আমাকে এখানে গুন্ডাপান্ডা দিয়ে বারবার পেছন থেকে টেনেহিঁচড়ে গেট থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। পরে একপর্যায়ে আমি যখন ভেতরে প্রবেশ করি, সেখানে দেখি বিএনপিসহ রুমিন ফারহানার লোকজন। একটা পর্যায়ে যখন আমার সময় আসে, আমি শুনানিতে দাঁড়াই। দাঁড়ানোর পর রুমিন ফারহানা তেড়ে এসে আমাকে প্রথমে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। আমাকে কথা বলতে দেননি এবং তার গুন্ডাপান্ডা দিয়ে আমাকে পায়ের নিচে ফেলে নির্মমভাবে মারধর করে। তারা পরিকল্পিতভাবে এখানে মারধর করতে চেয়েছে, যাতে আমরা আমাদের যুক্তি উপস্থাপন না করি।’
তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চেয়েছেন এবং বিচার না পেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। ঘটনার তদন্তের জন্য ইসিতে চিঠি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।