কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স এবার মিলেছে ২৩ বস্তা টাকা। শনিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে ওই বস্তাগুলো খুলে টাকা গণনা চলছে। শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দান দানবাক্স খোলা হয়। দানবাক্সগুলো খুলে ২৩টি বস্তায় ভরে টাকাগুলো মসজিদের দোতলায় নিয়ে যাওয়া হয় গণনার জন্য।
টাকা গণনার কাজে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ.টি.এম ফরহাদ চৌধুরী, সিনিয়র সহাকারী কমিশনার (ভূমি) এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নাশিতা-তুল ইসলাম, তানিয়া আক্তার, নাবিলা ফেরদৌস, মাহমুদা বেগম সাথী, ফাতেমা-তুজ-জোহরা, মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমানসহ মাদরাসার ১১২ জন ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন।
জেলাপ্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত ৬ মে মসজিদের দানবাক্স খোলার সময় ১৯ বস্তায় ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া গিয়েছিল। এর আগে,চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ৩ মাস ১ দিন পর দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ২০টি বস্তায় ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটিকে পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স নামকরণ করা হয়েছে। এ মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
মুসলমানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন লোকজন এ মসজিদে দান করে থাকেন। তাদের বিশ্বাস, এখানে দান করলে মনোবাসনা পূরণ হয়। তাই ছুটে আসেন পাগলা মসজিদে। দান করেন মোটা অঙ্কের টাকা। টাকার সাথে সোনা-রূপার অলঙ্কারসহ থাকে বিদেশি মূদ্রাও। তাছাড়া প্রতিদিন বিপুল সংখ্যাক গোবাদিপশু, হাঁস-মুরগি, ফলফলাদি, মোমবাতি ও ধর্মীয় বই দান করে লোকজন। এছাড়া, দানবাক্সে চিঠিপত্রও পাওয়া যায়। এসব চিঠিতে লোকজন তাদের জীবনে পাওয়ার আনন্দ, না-পাওয়ার বেদনা, মামলা থেকে মুক্তি, চাকরি প্রত্যাশা, পরকীয়া থেকে ফিরিয়ে আনা,রোগব্যাধি থেকে মুক্তিসহ নানা আকুতি প্রকাশ করেন।