প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়ে কাজ করাতে চায়, তাহলে তিনি পদে থাকবেন না।
শনিবার সকালে রাজশাহীর আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। অতীতের মতো কোনো চাপ বা প্রভাব এখানে কার্যকর হবে না। “আমাদের কর্মকর্তারা জানেন, এই কমিশন পক্ষপাত করবে না। তারা আইন অনুযায়ী কাজ করবেন। আগে সরকার বা কমিশনের চাপ ছিল, কিন্তু এখন আমাদের সে সমস্যা নেই।”
ভোট জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তারা কি আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পাবেন—এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, “আমার কাছে ৫ হাজার ৭০০ কর্মকর্তা আছেন। সবাইকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে অনিয়ম করেছে, তাদের দায়িত্বে রাখা হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো চাপ দেয়নি। তবে যেদিন দেবে, সেদিন আমি এ পদে থাকব না।”
ভোটকেন্দ্র বা ব্যালট বাক্স দখলের চেষ্টা করা হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন সিইসি। তিনি বলেন, “যারা কেন্দ্র দখলের স্বপ্ন দেখছেন, তা ভুলে যান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এবার কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে।”
আগামী নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান জোরদারের ঘোষণা দেন তিনি। সেই সঙ্গে সেনা, নৌ, বিমান ও কোস্টগার্ডকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞার মধ্যে আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান সিইসি।
তিনি আরও বলেন, কোনো আসনে অরাজকতা বা অনিয়ম হলে সেই আসনের পুরো ভোটই বাতিল করা হবে। “আমরা একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। কর্মকর্তাদের স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে—কেবল আইন অনুযায়ী কাজ করতে হবে, বেআইনি কোনো নির্দেশ মানা হবে না।”
ভোটের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে সিইসি জানান, প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সব দল নির্বাচনে আসবে কি না, সময়ই বলে দেবে। আমি বিশ্বাস করি, দেশের মঙ্গলের জন্য তারা একসময়ে ঐক্যমতে পৌঁছাবে। আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।”
পরে তিনি রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। সভার সভাপতিত্ব করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।