প্রিয়া খান টিএসসি কেন্দ্রিক মানুষজনের অতি পরিচিত একমুখ এবং টিএসসিতে প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের চায়ের দোকানদার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিছুদিন আগে ক্যাম্পাসে ভাসমান দোকান উচ্ছেদ অভিযানের পর অনুমোদনকৃত যে ১১ টি চায়ের দোকান টিএসসিতে রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো প্রিয়া খানের চায়ের দোকান।
আপাতদৃষ্টিতে এটিকে শুধুমাত্র একটি চায়ের দোকান মনে হলেও প্রিয়ার কাছে দোকানটি অনেক বড় বিষয়। তার ভাষ্যমতে এটি তার কাছে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন। তিনি ২০১৬ সাল থেকে চেষ্টা করছেন স্বাবলম্বী হওয়ায়।
চায়ের দোকান দেওয়ার আগে প্রিয়া টিএসসি থেকে টাকা তুলতেন। ২০২০ সাল থেকে তিনি প্রতিদিন টিএসসি আসতেন। এর আগে, তিনি নাচ-গান করে অর্থ উপার্জন করতেন। পুরান ঢাকায় থাকতেন `পুরান ঢাকার বাঈজী` হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন।
প্রিয়া জন্মগ্রহণ করেন সাভারে এবং বড় হয়েছেন টাঙ্গাইলে৷ তিনি প্রায় ২৪ বছর আগে ঢাকায় আসেন এবং নাচ-গান করে টাকা উপার্জন শুরু করেন। পরবর্তীতে চাহিদা কমায় তিনি বাধ্য হন মানুষের কাছে হাত পাততে।
ছাত্র আন্দোলনের সময় প্রিয়া ও তার ৪ শিষ্য মিলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করেন।
সে সময়ের স্মৃতিচারণ করে প্রিয়া বলেন, “ওই সময়ের ঘটনাগুলো বর্ণনা করা আমার পক্ষে সম্ভব না, মৃত্যুর মিছিল বলা চলে। সেখানে প্রেগন্যান্ট মানুষ শিশু কোনোটাই বাদ যায়নি।”
প্রিয়া আরও বলেন, “মানুষ বাঁচার জন্য সবকিছু করে। সেই সুবাদেই আমার হাত পাতা।”
তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর উদ্দেশ্যে বলেন, “আমরা আর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী থাকব না। সবাই সবার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবো।”
নতুন বাংলাদেশে তারা কি চান জানতে চাইলে প্রিয়া বলেন, “মানুষের যে ৫ টি মৌলিক অধিকার আছে তাই চাই এবং বুলিইং এর শিকার থেকে মুক্তি চাই।”
তিনি আরও বলেন, “বৈষম্য দূর করার জন্য এত মানুষের মৃত্যু হল, সরকার পালিয়ে গেল তারপরও যদি বৈষম্য দূর না হয় তাহলে লাভ কী হলো?”