ছবি: সংগৃহীত
অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র জনতার প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্বে আসা নাহিদ ইসলাম সাড়ে ছয় মাসের মাথায় সেই দায়িত্ব ছাড়লেন ‘ছাত্র-জনতার কাতারে’ ফিরে যাওয়ার জন্য।
অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব সামলে আসছিলেন নাহিদ। মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় বাসভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র দেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে যে নতুন রাজনৈতিক দল আসতে যাচ্ছে, তাতে যোগ দিতেই সরকারের দায়িত্ব ছাড়লেন এই তরুণ নেতা।
পদত্যাগপত্রের শুরুতেই নাহিদ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহত সহযোদ্ধাদের কথা ‘শ্রদ্ধাভরে’ স্মরণ করছেন। রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের পরে ছাত্র-জনতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ‘পরিবর্তিত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের’ দায়িত্ব নেওয়ায় নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
নাহিদ লিখেছেন, “বৈষম্যহীন, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আপনার নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদে আমাকে সুযোগ দানের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।”
“গত ০৮ আগস্ট ২০২৪ খ্রি. তারিখে শপথ নেওয়া উপদেষ্টা পরিষদে আমি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাই। নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আপনার নেতৃত্বে দায়িত্ব পালনে সদা সচেষ্ট থেকেছি।”
এরপর নিজের পদত্যাগের কারণ ব্যাখ্যা করে নাহিদ লিখেছেন, “বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমার ছাত্র-জনতার কাতারে উপস্থিত থাকা উচিত মর্মে আমি মনে করি। ফলে আমি আমার দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়া সমীচীন মনে করছি।”
আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা জুলাই অভ্যুত্থানের মূল নেতাদের সম্মুখ সারিতে রেখে ২৮ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন দলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে। নাহিদকে সেই দলের আহ্বায়কের দায়িত্বে দেখা যেতে পারে।
৩৬ দিনের যে আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন, তার অগ্রভাবে ছিলেন নাহিদ ইসলাম। তখন তিনি ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক।
দাবি আদায়ের কর্মসূচি ঘোষণা থেকে শুরু করে বিক্ষোভের ময়দানে দিনের পর দিন সোচ্চার নেতৃত্বে দেখা গেছে ২৬ বছরের এই তরুণকে। সেজন্য তাকে যেতে হয়েছে ‘আয়নাঘরেও’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা নাহিদের ডাক নাম ফাহিম। তার বাড়ি ঢাকার খিলগাঁও দক্ষিণ বনশ্রীতে।
দুই বছর আগে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক আখতার হোসেনেরে নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করা ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’র কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব ছিলেন নাহিদ। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রু আন্দোলনে এই সংগঠনের অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।