ক্রিকেটে এমন অনেক নিয়ম রয়েছে যা সম্পর্কে অনেকেরই ভালো ধারণা নেই। এই যেমন দিল্লির অরুন জেটলি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের ৩৮তম (বাংলাদেশ-শ্রীলংকা) ম্যাচে টাইমড আউট হলেন শ্রীলংকার সাবেক অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। এই ধরনের আউট ১৪৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম।
ক্রিকেট আইনে বর্তমানে একজন ব্যাটসম্যান ১১ ধরনে আউট হতে পারেন। আউট হওয়ার সেসব ধরন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক—
ক্যাচ/কট আউট : ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে কিংবা গ্লাভস ছুঁয়ে বল মাটিতে স্পর্শ করার আগেই ফিল্ডিং দলের কেউ বলটি তালুবন্দী করতে পারলে সেটি ক্যাচ আউট। এটিও তিন ধরনের হয়ে থাকে — ১) কট বাই দ্যা ফিল্ডার, ২) কট অ্যান্ড বোল্ড ও ৩) কট বিহাইন্ড।
বোল্ড : বোলারের ডেলিভারিতে বল যদি সরাসরি উইকেটে গিয়ে আঘাত করে এবং বেলস পড়ে যায় তাহলে সে ব্যাটার বোল্ড আউট হবেন। তবে ব্যাটে লেগে অথবা শরীরের অন্য কোথাও লেগে গিয়ে স্টাম্প ভেঙে গেলেও ব্যাটার বোল্ড আউট হবেন।
লেগ বিফোর উইকেট (এলবিডব্লিউ) : বোলারের বল ডেলিভারি করার পর ব্যাটে স্পর্শ না করে ব্যাটসম্যানের পায়ে লাগলে আম্পায়ারের বিবেচনায় যদি মনে হয় স্টাম্প লাইনে রয়েছে তাহলে তিনি এই আউট দিতে পারেন।
স্টাম্পিং : ব্যাটসম্যান বলে হিট করার আগেই যদি ক্রিজ থেকে বাইরে বেরিয়ে যান অথবা শরীরের কোন অংশ যদি লাইন স্পর্শ না করে থাকে তাহলে উইকেটরক্ষক বলটিকে ধরে বেল উড়িয়ে দিতে পারেন।
রান আউট : ব্যাটসম্যান যখন রান নেওয়ার সময় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দৌড়ান এবং তার ক্রিজে পৌঁছানোর আগেই যদি কোনো ফিল্ডার দ্বারা সরাসরি অথবা তালুবন্দি করে উইকেটের বেল ফেলে দেন, তাহলে তিনি রান আউট হবেন।
হিট উইকেট : রান নেওয়ার সময় কিংবা ক্রিজে থাকাকালে ব্যাটম্যানের ব্যাট অথবা শরীরের কোন অংশ যদি স্টাম্পে লেগে বেল পড়ে যায় তাহলে তিনি হিট আউট।
অবস্ট্রাকটিং দ্যা ফিল্ড : ফিল্ডার দ্বারা ছোড়া বল উইকেটরক্ষকের হাতে পৌঁছানোর আগে ব্যাটসম্যান যদি ইচ্ছাকৃতভাবে সেটিকে বাধা দেন তাহলে এ ধরনের আউটের পর্যায়ে পড়বেন।
হ্যান্ডেল্ড দ্যা বল : ব্যাটের স্পর্শ এবং প্রতিপক্ষ দলের ফিল্ডিংয়ের সম্মতি ছাড়া যদি ব্যাটসম্যান ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো বলে স্পর্শ করেন তাহলে সেটি ‘হ্যান্ডেল্ড দ্যা বল’ আউট।
হিট দ্যা বল টোয়াইস : ডেলিভারি হওয়া কোন বল যদি ব্যাটসম্যান একের অধিকবার আঘাত করেন তাহলে তিনি ‘হিট দ্য বল টোয়াইস’ আউট হবেন। প্রথমবার হিট করার পর দ্বিতীয়বার যদি ব্যাট, পা অথবা অন্যকোনো ভাবে বলটিকে আঘাত করা হয় তবুও এই আউট হবে। তবে টেস্ট ক্রিকেটে এই আউট নেই।
টাইমড আউট : একজন ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার পর যদি নতুন ব্যাটসম্যান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাউন্ডারি লাইনের মধ্যে প্রবেশ করতে না পারেন তাহলে তিনি টাইমড আউট হবেন। এক্ষেত্রে টেস্টে ১৮০ সেকেন্ড, ওয়ানডেতে ১২০ সেকেন্ড এবং টি-টোয়েন্টিতে ৯০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে ব্যাটসম্যানকে বাউন্ডারি লাইনের ভিতরে প্রবেশ করে প্রথম বল মোকাবিলা করতে হবে।
রিটায়ার্ড হার্ট : কোন ব্যাটসম্যান যদি আঘাত পেয়ে আম্পায়ারের সম্মতি ছাড়াই মাঠ ছাড়েন এবং তিনি ওই ইনিংস পুনরায় শুরু করতে চাইলে প্রতিপক্ষ অধিনায়কের সম্মতি না থাকলে ওই ব্যাটসম্যানকে রিটায়ার্ড আউট বলে গণ্য করা হয়।