বল হাতের মায়াবী ঘূর্ণির জালে ফেলে আফগানিস্তানকে বিপাকে ফেলেছেন নাসুম আহমেদ। যৌথভাবে ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে আফগানবধে রেখেছেন বড় ভূমিকা। বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েই নাসুমরা অনেক আত্মবিশ্বাসী। এমনটা মনে করছেন গুরু রঙ্গনা হেরাথ। আজ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি টোয়েন্টি। আজ জিতলে সিরিজ ২-০ তে জেতার সুযোগ বাংলাদেশের।
আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দেওয়ার পর দিন শুক্রবার (৪ মার্চ) গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন শ্রীলংকান এই কোচ। এ সময় তার শিষ্য স্পিনারদের সাফল্যের রহস্য জানাতে গিয়ে হেরাথের মন্তব্য, বেশি সুযোগ পেয়ে স্পিনাররা দারুণ পারফর্ম করছেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে আমার বিশ্বাস আপনি যখন খেলোয়াড়দের প্রচুর সুযোগ দেবেন, তখন তারা বেশি আত্মবিশ্বাস পায়। বোলিং আক্রমণের কথা বললে তারা বেশ ভালো সুযোগ পাচ্ছে। যদি ব্যাটসম্যানরা এমন সুযোগ পায় তবে তারাও সেরাটা দিতে পারবে।’
নাসুমের অভিষেক হয়েছে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে। অভিষেক ম্যাচে ২ উইকেট পেলেও পরের দুই ম্যাচে উইকেটের দেখা পাননি। নিউজিল্যান্ডের পর জিম্বাবুয়ে সিরিজে ১ ম্যাচ খেললেও সুবিধা করতে পারেননি। নাসুম ধারাবাহিক ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ থেকে। সে সময় অজিদের বিপক্ষে ১৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে জানান তিনি হারিয়ে যেতে আসেননি। ঘরের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষেও ৪ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন মাত্র ১০ রান দিয়ে।
এ ছাড়া বিশ্বকাপে খেলেছেন ৩টি ম্যাচ। বিশ্বকাপ থেকে এসে পাকিস্তানের বিপক্ষে সুযোগ পেয়েছিলেন ১টি ম্যাচে। আর এবার আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত। ১০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ জয়ে রেখেছেন বড় ভূমিকা।
নাসুমের অভিষেকের পর থেকে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে ২৮টি। আর নাসুম খেলেন ১৯টি। এ সময় নাসুম ৬.২৬ গড়ে নিয়েছেন ২৬ উইকেট। তার মধ্যে ৪ উইকেট করে নিয়েছেন ৩বার! হেরাথ মনে করেন বেশি সুযোগের কারণেই তারা সাফল্য পাচ্ছেন। ব্যাটসম্যানরাও এমন সুযোগ পেলে ভালো করবেন বলেও জানিয়েছেন সাবেক এই কিংবদন্তী ক্রিকেটার। নিজের উদাহরণ টেনে হেরাথ বলেন, ‘একজন শ্রীলঙ্কান হিসেবে আমি আমার দেশের হয়ে অনেক বছর খেলার সুযোগ পেয়েছি। আর আমি বিশ্বাস করি যখন আপনি এই সুযোগ পাবেন আপনার তখন দেশকে কিছু না কিছু ফেরত দিতে হবে। সে দিক থেকে চিন্তা করলে ছেলেরা ভালো করছে।’
আরও একটি বিষয় হেরাথ গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন। সেটা হলো মাইন্ডসেট। তার মতে যে কন্ডিশনই হোক ক্রিকেটারা যদি বোঝে তার রোল কী হতে পারে তাহলে ভালো করবে, ‘আমি সবসময় মাইন্ডসেটের ব্যাপারটা ভাবি। কন্ডিশন পক্ষে থাকুক বা না থাকুক, আপনার এটা বোঝার প্রয়োজন এবং কন্ডিশন নিয়ে সতর্ক হতে হবে। এ ক্ষেত্রে সেটা টার্নিং উইকেট হোক কিংবা না হোক, বোলারদের দায়িত্বটা আপনাকে বুঝতে হবে। তাদেরকে পরিষ্কার বার্তা দেওয়া হয়েছে ভূমিকা সম্পর্কে, যে কারণে তারা সফল হয়েছে প্রকৃতপক্ষের বিপক্ষে। আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে খেলা যেখানেই হোক, বাংলাদেশ হোক কিংবা শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ড, আপনার মাইন্ডসেটটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যখন আপনি আপনার দেশের হয়ে খেলবেন তখন সেখানে দায়িত্ব ও খেলার ভূমিকা থাকে, আর সেসব বোঝা খুব গুরুত্বপূর্ণ’-আরও যোগ করেন হেরাথ।