আগস্ট ২৬, ২০২১, ০৩:২১ পিএম
করোনা ভাইরাসের উৎস কোথায়? সারবিশ্বে প্রায় সবাই এই প্রশ্নের জবাব চান। কিন্তু জবাব চাইলেই পাওয়া যাবে এমন নয়। তবে জবাব চাওয়া মানুষটি যদি হন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তবে জবাব পাওয়াটা সহজ। কিন্তু বিশ্বের সবচেয় ক্ষমতাধর এই মানুটিও জবাব পাননি।
করোনা ভাইরাসের উৎস খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নির্দেশ মেনে গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত চালিয়ে সে ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন জামা দিয়েছে মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট)। তবে সেই প্রতিবেদন কোন সিদ্ধন্তে পৌঁচাতে ব্যর্থ হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমগুলোর মতে, হোয়াইট হাউসে জমা দেয়া প্রতিবেদনটি অমীমাংসিত। তারা আরো জানিয়েছে, প্রথম করোনার সূত্রপাত হয় চীনে। কিন্তু চীনের কাছ থেকে পর্যাপ্ত তথ্য না পাওয়ায় করোনার উৎস নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি গোয়েন্দারা।
এর আগে প্রায় ৯০ দিন আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেন করোনার উৎস সন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার নির্দেশেই মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রতিবেদন জমা দেয়। করোনাভাইরাস প্রাকৃতিকভাবেই প্রাণী থেকে মানুষে ছড়িয়েছে, নাকি পরীক্ষাগার থেকে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে, তা নিয়ে কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি গোয়েন্দারা। প্রতিবেদনটির সঙ্গে জড়িত দুইজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হতে পারে।
তিন মাস আগে বাইডেন বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকে করোনার দুটি উৎসের কথা বলা হচ্ছে। একটি হলো প্রাণী, অপরটি পরীক্ষাগার। তার নির্দেশের পর তিন মাস তদন্ত চালিয়েও মার্কিন গোয়েন্দারা কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে আসতে ব্যর্থ হলেন।
তবে, বিবিসি এপ্রসঙ্গে জানিয়েছে, প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই তা নাকচ করেছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, এই প্রতিবেদন বিজ্ঞানবিরোধী। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণাকে ‘উপেক্ষা ও বর্জন’ করে নতুন যে প্রতিবেদন দিয়েছে তা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসন বারবার অভিযোগ করেছে, ভাইরাসটি চীনের উহানের পরীক্ষাগার থেকেই ছড়িয়েছে। তবে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকেও (ডব্লিউএইচও) উহানে গিয়ে তদন্ত করার সুযোগ দিয়েছিল দেশটি। সম্প্রতি সংস্থাটি দ্বিতীয়বার উহানে তদন্ত করা আবেদন করলে সে আবেদনে সাড়া দেয়নি চীন। তারা পরামর্শ দিয়েছে ডব্লিউএইচও যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্ট ডেট্রিকের পরীক্ষাগার পরিদর্শন করুক। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আর্মস কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্টের প্রধান ফু সং এ প্রসঙ্গে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি চীনকে ভিত্তিহীনভাবে দোষারোপ করে, তবে তার পাল্টা জবাবের জন্যও তাদের প্রস্তুত থাকা উচিত।
উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে এই মহামারিতে এখন অবধি মারা গেছেন ৪৪ লাখের বেশি মানুষ। আক্রান্ত হয়েছেন ২১ কোটিরও বেশি।
ফু সং বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি মনে করে চীনের দোষ আছে, তবে তথ্য দিয়ে সেটা প্রমাণ করতে হবে। আপনি তথ্য না দিয়ে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে পারেন না।
সূত্র: এএফপি