ধীরে ধীরে মরুভূমি হচ্ছে দেশ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ৬, ২০২২, ০৩:৫৭ এএম

ধীরে ধীরে মরুভূমি হচ্ছে দেশ

জলবায়ু পরিববর্তনের ফলে সবচেয়ে বড় সংকটে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলায় প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিলেও মরুভূমি হওয়ার নানা লক্ষণ  দেখা যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। মরুভূমির দূর্লভ উদ্ভিদ সূর্য শিশির মিলছে দেশের দিনাজপুরে। এছাড়া দেশের ৫ টি জেলায় ধীরে ধীরে মরুভূমির সকল লক্ষণ উপস্থিত হচ্ছে।

মাটির গুণাগুণ নষ্ট হচ্ছে উত্তরবঙ্গে

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, জেলার পাঁচ উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোতে ২৭টি চর জেগেছে, যা নদী-নালা, খাল-বিল শুকানোর ইঙ্গিত বহন করছে। এসব চর ২৫টি ব্লকে ভাগ করে চাষের আওতায় এনেছে জেলা কৃষি বিভাগ। যার মোট আয়তন ৯০৬ হেক্টর। এছাড়া অধিক ফসল ফলাতে জমিতে জৈব সার ব্যবহারে কৃষকদের উহিতকরণে ব্যাপক প্রচারণা, অপরিকল্পিত নগরায়ণ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, নদীতে পানিপ্রবাহে যথাযথ উদ্যোগ, খাল-বিল ও জলাভূমিসমূহ সংরক্ষণেও তাগিদ দেয়া হয়।

চিরিরবন্দর উপজেলায় কাঁকড়া নদীতে মরানদী চর, পূর্বসাইতারা চর রয়েছে। বীরগঞ্জের ঢেপা ও পূর্ণভবা নদীতে রয়েছে নিজপাড়া, ধুলাউড়ি, ভোগডমা, বর্ষা, বিজয়পুর, ভোলানাথপুর, মিটিয়াকুড়া ও ভগিরপাড়া চর। খানসামার ইছামতি নদীতে জেগেছে গোবিন্দপুর, বাসুলি, শুশুলী, ডাঙ্গাপাড়া, বেলপুকুর, জোয়ার, কায়েমপুর, শুড়িগাও, আগ্রা ও কাচিনিয়া চর।

কাহারোলের তেঁতুলিয়া (তুলাই) নদীতে কান্তনগর, রামচন্দ্রপুর, সুন্দরপুর, ঈসানপুর, উচিৎপুর ওবলেয়া চর। ঘোড়াঘাটে করতোয়া নদীতে কুলানন্দপুর চরের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও দিনাজপুরে কাগজ কলমে ৭৫টি বিল রয়েছে। সেগুলোও ভরাট, দখল দূষণে হারিয়ে যাচ্ছে।

কৃষিবিদ মো. মামুন আল আহসান চৌধুরী দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, “মাটির পুষ্টিগুণ উর্বরতা ঠিক রাখতে যে ১৬টি খাদ্য উপাদান প্রয়োজন তার ৯টির ঘাটতি রয়েছে দিনাজপুরের মাটিতে। ফলে মাটিতে অম্লতা বেড়েছে। মাটিতে অম্ল বেড়ে যাওয়া মরুকরণের লক্ষণ। সেদিক থেকে দিনাজপুর মরকরণের দিকে ধীরে ধীরে ধাবিত হচ্ছে।

পানিপ্রবাহ বৃদ্ধির তাগিদ

বাংলাদেশ মৃত্তিকা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক মফিজুর রহমান  বলছেন, মরুকরণের প্রধান দুটি বিষয়ের একটি বিস্তৃত এলাকাজুড়ে মাটি অনুর্বর, নদী-নালা, খাল-বিল শুকানো এবং বৃষ্টি কমে যাওয়া। দ্বিতীয় মাটির অম্লতা বৃদ্ধি। বিগত কয়েক দশক ধরে এ দুটি বিষয় খুব বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে সম্প্রতি বাংলাদেশে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দিনাজপুরের মৃত্তিকায় মরুজ উদ্ভিদসমূহের জন্ম এবং বিকাশ মরুকরণের প্রভাব আঁচ করা যাচ্ছে।

এদিকে,সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর নদীগুলোতে পানিপ্রবাহ যথেষ্ট না থাকা এবং ভূগর্ভস্থ পানির অধিক ব্যবহার মরুকরণতার প্রভাবকে ত্বরান্বিত করছে। ক্রোটন, দুধিয়া, দুধস্বর, সূর্যশিশিরসহ বিভিন্ন উদ্ভিদ তারই সাক্ষর বহন করছে। দিনাজপুরের মাঠে  ঘাটে ক্রোটন উদ্ভিদের অধিক জন্মানোর হার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিষয়টি স্পষ্ট করছে। তাই দ্রুত পানি প্রবাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি মাটির গুণাগুন বৃদ্ধি জন্য জৈব সার ব্যবহারেও তাগিদ দেন সংশ্লিষ্টরা।

Link copied!