দেশে মোট দরিদ্রের ৫১ শতাংশ নতুন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ১৮, ২০২৩, ০২:২১ এএম

দেশে মোট দরিদ্রের ৫১ শতাংশ নতুন

করোনা পরবর্তীতে দেশে ৫১ শতাংশ নতুন দারিদ্র্যের আবির্ভাব ঘটেছে। নতুন এ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আগে জীবিকার উপায় বা কর্মসংস্থান ছিলো। কিন্ত করোনার দীর্ঘ ২ বছরে তারা কর্মহীন হয়ে ধারদেনা করে চলেছে। এর ফলে জনগোষ্ঠীর এ অংশ নিন্ম মধ্যবিত্ত থেকে অবনতি হয়ে দরিদ্রে পরিনত হয়েছে। 

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। 

সরকারী এ গবেষনা সংস্হার মহাপরিচালক বিনায়ক সেন বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে 'বিআইডিএস রিসার্চ অ্যালমানাক ২০২৩' সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে এই তথ্য প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, "করোনা মহামারির সময় দারিদ্র্যের হার প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। পরে সেটি ধীরে ধীরে কমে আসে। তবে, করোনার কারণে শহরের সমাজে নতুন দারিদ্র্যের আবির্ভাব ঘটেছে। গত বছর মোট দরিদ্রের ৫১ শতাংশই ছিল নতুন দরিদ্র।"

তিনি বলেন, "নতুন এ দরিদ্র জনগোষ্ঠী নিম্নমধ্যবিত্ত পর্যায় থেকে নেমে গেছে। করোনাকালে অনেক শিশু স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে। নিম্ন আয়ের পরিবারের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি পাওয়া গেছে। শহরাঞ্চলে সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা অল্প বিধায় এই জায়গায় বেশি নজর দিতে হবে।"

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম ও পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিৎ কর্মকার।

বিনায়ক সেন বলেন, করোনার পরবর্তী সময় দারিদ্র্য কমাতে আত্মকর্মসংস্থান বড় ভূমিকা রেখেছে। যাদের এদের মধ্যে যাদের আর্থিক সঞ্চয় ছিল তারা সেটি ভেঙে নিজের কর্মসংস্থানের জন্য কাজে লাগিয়েছেন। আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস দারিদ্র্য কমিয়ে আনতে সহায়তা করেছে।

তিনি বলেন, ২০১৯ সালে দরিদ্র খানা বা পরিবারের মধ্যে ৩৯ দশমিক ২৯ শতাংশ মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করত। করোনার পর অর্থাৎ ২০২২ সালে সেটি বেড়ে ৭৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ হয়েছে। 

মোট ২ হাজার ৪৬টি খানার ওপর জরিপ এই গবেষণা করে বিআইডিএস। গবেষনায় বলা হয়, করোনার আগে ২০১৯ সালে দরিদ্র মানুষের মধ্যে আত্মকর্মসংস্থানের হার ছিল ৩৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। করোনার পর ২০২২ সালে সেটি বেড়ে ৩৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়েছে। 

এতে বলা আরও বলা হয়, অতিদরিদ্র মানুষের মধ্যে করোনার আগে আত্মকর্মসংস্থানের হার ছিল ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। করোনার পর সেটি বেড়ে ৩৩ দশমিক ২১ শতাংশ হয়েছে। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, যখন সম্পদ সৃষ্টি হয় তখন বৈষম্য অবধারিত। 

তিনি বলেন, "বৈষম্য কমাতে আমরা কাজ করছি। তারই অংশ হিসেবে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা দেওয়া হচ্ছে।সমতাভিত্তিক সুযোগ নিশ্চিত করা গেলে বৈষম্য কমানো সম্ভব। আমরা সেটিই করার চেষ্টা করছি।"

Link copied!