আশ্রয়ণ-২: প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাচ্ছে আরও ৬৫ হাজার পরিবার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ৩১, ২০২২, ০৩:৪৮ এএম

আশ্রয়ণ-২: প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাচ্ছে আরও ৬৫ হাজার পরিবার

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাচ্ছে আরও ৬৫ হাজার ৪৭৪ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় ধাপে নির্মিত এসব ঘর তৈরির কাঠামোতে বেশ পরিবর্তন আনা হয়েছে। ঘরগুলো মজবুত ও টেকসই করতে নির্মাণ ব্যয়ও বেড়ে গেছে। আসছে ঈদ-উল ফিতরের পর ঘরগুলো আনুষ্ঠিানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।   

প্রকল্প সূত্র জানায়, তৃতীয় ধাপে ঘরপ্রতি নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হেসেন মিয়া জানিয়েছেন, আগের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চেয়ে ঘরপ্রতি নির্মাণ ব্যয় ৬৯ হাজার ৫০০ টাকা বেড়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এই সিনিয়র সচিব আরও বলেন, “পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে আশ্রয়ণের বিষয়টিকে আমরা বলছি- ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল’। চলতি অর্থবছর এ কার্যক্রমের আওতায় আসবে এক লাখ ৮২ হাজার ৮০৩টি পরিবার। এতে তিন হাজার ৯৭১ কোটি ছয় লাখ ৮৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় ধাপের কাজ চলছে। এতে ৬৫ হাজার ৪৭৪টি পরিবার ঘর পাবে।”

‘আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ও একমাত্র প্রকল্প, যাতে একসঙ্গে এত পরিবারের জীবনমান উন্নয়ন করা হয়েছে’ উল্লেখ করে মো. তোফাজ্জল হেসেন মিয়া আরও বলেন, “ভিটেমাটির পাশাপাশি হচ্ছে কর্মসংস্থান। সমাজের মূলস্রোতের সঙ্গে চলে আসছে পিছিয়েপড়া বড় এই জনগোষ্ঠী।”

তৃতীয় ধাপে নির্মিত ঘরগুলো আরও টেকসই হবে বলে জানিয়েছেন আশ্রয়ন -২ প্রকল্প পরিচালক আবু ছালেহ মো. ফেরদৌস খান। ঢাকা জেলার সাভারের আশুলিয়ায় শিমুলিয়া ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ী আশ্রয়ণ এলাকায় ৬৪টি ঘর পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক বলেন, “ ঘরপ্রতি নির্মাণব্যয় ৬৯ হাজার টাকা বেড়ে গেছে এবং ঘরগুলো যাতে মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী হয় তার জন্য নির্মাণ কাঠামোতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।” তৃতীয় ধাপের এই ঘরগুলো যত দ্রুত সম্ভব হস্তান্তর করা হবে বলেও তিনি জানান।  

এর আগে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে গত বছর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে এক লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি ঘর দেওয়া হয়েছে। দুই শতক জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা ঘর করে দেওয়া হয়েছে তাদের। এর সঙ্গে রান্নাঘর ও টয়লেট ছিল। আঙিনায় হাঁস-মুরগি পালন ও শাক-সবজি চাষেরও জায়গা ছিল।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চরাঞ্চলের জন্য করা হয়েছে ভূমিকম্প সহনীয় বিশেষ ডিজাইন। তৃতীয় ধাপে চরে এক হাজার ৪২টি ঘর নির্মাণ হচ্ছে। চলতি অর্থবছর এ কার্যক্রমের আওতায় আসবে এক লাখ ৮২ হাজার ৮০৩টি পরিবার। এতে ৩ হাজার ৯৭১ কোটি ৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এখন তৃতীয় ধাপের কাজ চলছে। এতে ৬৫ হাজার ৪৭৪টি পরিবার ঘর পাবে।

প্রকল্প সূত্র আরও জানায়, সরকারি খাস জমির পাশাপাশি সরকারের ক্রয় করা জমিতে এসব ঘর তৈরি হচ্ছে। আর এসব জমি ক্রয়ের জন্য ১০৯ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। সরকারের ক্রয় করা জমিতে তৈরি ঘরগুলোতে ৬ হাজার ৮৯১ টি পরিবার পুনর্বাসিত হয়েছে। এছাড়া, প্রকল্পের ঘর তৈরির জন্য অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে সরকার ১৫৫ একর খাস জমি উদ্ধার করেছে যার বর্তমান বাজারমূল্য ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ১৯৯৭ সালের জুনে আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করে। এই প্রকল্পের মাধ্যেমে এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৪ হাজার ৩টি গৃহহীন পরিবারের ৩৫ প্রায় ৩৫ লাখ লোক পুনর্বাসিত হয়েছেন। 

Link copied!