নাম তার অপূর্ব রাজা। রাজা হলেও তার দুঃখ অনেক। তাইতো সে কয়েক দিন ধরে অঝোরে কেঁদে চলেছে। কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছেনা তার কান্না। মালিক এনামুল হাসান মোহিতের সাথে এসেছে গাবতলির পশুর হাটে। উঁচু লাল রঙের লম্বা স্বাস্থবান এই অপূর্ব রাজার ওজন আনুমানিক বিশ মন। হাটে দাম ধরা হয়েছে পাচঁ লাখ বিশ হাজার। এই হাট থেকে তার আর বাড়ি ফেরা হবেনা, যেতে হবে অন্তিম গন্তব্যে- একথা জেনে গেছে সেও। এনামুল হাসান ও তার স্ত্রী গত ১৮ মাস ধরে অনেক যত্নে পালন করেছেন এই গরুটিকে।
এনামুল বলেন, ‘ও আমার সব কথা শোনে, ডাকলে সাড়া দেয়। সামনে আসতে বললে আসে আবার পিছনে যেতে বললেও যায়।’
গাবতলী পশুর হাটে দেখা মিললো লাল বাহাদুর নামে আরেকটি গরুর। বিক্রেতা আদর করে তার ওই নাম রেখেছেন। ২৮ মন ওজনের বিশাল আকৃতির এই গরুর দাম উঠেছে ৯ লাখ টাকা। আশানূরুপ ক্রেতা না পাওয়ায় বিক্রি করতে পারছেন না। তিনি বলেন, এই গরুর দাম ৯ লাখ টাকা। ক্রেতারা নির্ধারিত দামের বিশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা কম বলায় গরুটিকে বিক্রি করতে পারছেন না।
এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, অন্যবারের থেকেও চড়া দাম বলছেন বিক্রেতারা। তাই সাধ্যমত গরু কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। অনেকে সকাল থেকে ঘুরেও নিতে পারছেন না পছন্দের গরু।
ঈদ উল আজহা উপলক্ষ্যে অনেকে আবার পেশা বদল করেছেন। তেমনি একজন মোহাম্মদ রাজু মিয়া। একজন অটো চালক। নিজের কাধেঁ একটি লম্বা লাঠিতে বাহারী রঙয়ের গরুর সাজ সজ্জার সামগ্রী ঝুলিয়ে ঘুরছেন গাবতলীর হাটে। সাজসজ্জার সামগ্রী বিক্রি করে তার আয় হয় প্রায় তিন থেকে চার হাজার টাকা। তিনি বলেন, ‘বাহারী রঙের এই মালা ক্রেতাদের কাছে গরুকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। তাই এই জিনিসের চাহিদা বেশি। আর দাম যার থেকে যা নিয়ে পারি।’
প্রতি বছরই কুরবানীর হাটে বানিজ্যের এই দৃশ্য খুবই পরিচিত। বাড়তি সংযোজন করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বিধি নিষেধ রাখা হলেও, ক্রেতা- বিক্রেতার আগমনে জমে উঠেছে হাট।