বিএনপির বর্তমান রাজনৈতিক দুরবস্থার জন্য দলটির শীর্ষ নেতাদের ‘ঘরবন্দী’ কর্মসূচিকে দায়ী করে, প্রেস ক্লাব ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের হলরুমের কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধ না থেকে রাজপথে নামার পরামর্শ দিয়েছেন দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা।
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দলীয় চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে দলের যুগ্ম মহাসচিব ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের দ্বিতীয় দিনের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে নেতারা এ আহ্বান জানান।
এদিন বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে শুরু হয়ে প্রায় আট ঘণ্টা ধরে চলা এ বৈঠকে সম্পাদকমণ্ডলীর ১২২ সদস্য অংশগ্রহণ করেন। এসময় ৫০-এর অধিক নেতা বৈঠকে বক্তব্য রাখেন।
আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মকৌশল ঠিক করার লক্ষ্যে নেতাদের মতামত জানতে গতকাল মঙ্গলবার থেকে তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ধারাবাহিক এ বৈঠক শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের বৈঠকে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা অংশ নেবেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বিএনপির সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক ইকবাল হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, ‘একটা সময় বিএনপির জনসভা ও সমাবেশের প্রতি মানুষের আলাদা আকর্ষণ ছিল। এখন আমাদের সমাবেশ প্রেস ক্লাব ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সীমাবদ্ধ। আমাদের এই দুরবস্থা কেন? এখন পাড়া-মহল্লায় বিএনপির কোনো রাজনীতির চর্চা নেই। এর মূল কারণ, যে নেতার বাসা মোহাম্মদপুরে, তিনি থাকেন উত্তরায়। যার বাসা কাঁঠালবাগান, তিনি থাকেন মহাখালীতে। তাহলে কীভাবে পাড়া-মহল্লায় আমাদের রাজনীতি থাকবে?’
বিগত দিনের আন্দোলনে সাবেক যেসব এমপি-মন্ত্রী ও নেতা অংশগ্রহণ করেননি তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানান দলের কেন্দ্রীয় জলবায়ুবিষয়ক সহ-সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল। এসময় তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে এসব নেতাকে দলের পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার মতো কঠোর সিদ্ধান্তে আসতে হবে আমাদের।’
বৈঠক শেষে রাত ১২টার দিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে। ১২২ জন উপস্থিত ছিলেন। সাংগঠনিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গতকাল ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আরও একটি সভা হবে। এরপরও সভা হতে পারে। পরের শনিবার সিদ্ধান্ত হবে। বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গেও আমাদের আলোচনা হবে।’
‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মিডিয়ার কেউ কেউ তারেক রহমানের বিষয়ে বানোয়াট প্রচারণা চালিয়েছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি’— বলেন মির্জা ফখরুল।