পটুয়াখালীর ‘নদীখেকো’ মেয়রকে অব্যাহতির সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ৫, ২০২৩, ১২:০৭ পিএম

পটুয়াখালীর ‘নদীখেকো’ মেয়রকে অব্যাহতির সুপারিশ

নদী রক্ষার দায়িত্ব যাঁর, তার বিরুদ্ধেই ‘নদী হত্যা’র অভিযোগ উঠেছে। ‍‍`নদীখেকো‍‍` নামে পরিচিতি পাওয়া পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদকে নদীদূষণের অভিযোগে অব্যাহতির সুপারিশ করেছে নদী রক্ষা কমিশন।

পৌরসভার বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, পৌরসভার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ফৌজদারি খাল। ভারী বৃষ্টিতে হাঁটুপানি জমে পৌর ভবনের আশপাশের এলাকায়। সেই জলাবদ্ধতা নিরসনে এই খালের গুরুত্ব অপরিসীম। সেই খাল রক্ষার দায়িত্ব পৌর মেয়রের। তবে তার হাতে তো রক্ষা পায়ইনি, উল্টো গলা টিপে খাল হত্যা করছেন তিনি। খাল দখল করে নিজস্ব বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন মেয়র, যা ‘টাইটানিক’ নামে পরিচিত।

তারা আরও জানান, সেই খালের উৎসমুখ লাউকাঠী নদীতে। নদীর সেই পানিপ্রবাহ বন্ধ করে মেয়র খেয়াঘাট স্থাপন করেছেন। পাশপাশি পৌরসভার ময়লা ফেলে সেই নদী ভরাট চলছে। এইক সঙ্গে পৌরসভার সুয়ারেজ লাইন নদী ও খালের সঙ্গে সংযোগ দিয়ে পানি দূষিত করা হচ্ছে।

পটুয়াখালী পৌর শ্মাশানের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সুতিখালী খাল। সেই খালের জায়গা ভরাট করে পৌরসভার টাকায় পৌরসভা রাস্তা নির্মাণ করেন মেয়র। এই খাল যখন ভরাট প্রক্রিয়া চলছিল, তখন গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে দেখতে আসেন নদী কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী। স্থানীয় এক বাসিন্দা বৃদ্ধ মাকসুদুর রহমান তালুকদার খাল ভরাটের প্রতিবাদ করে মেয়র মহিউদ্দিনের উপস্থিতিতে কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে খাল দখলের বর্ণনা দেন।

মেয়রের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ ও নদী রক্ষা কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করায় তাকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পৌরসভার প্রশাসক নিয়োগের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী চলতি বছরের ১৪ মে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের বরাবরে এই সুপারিশ করেন। সেই অনুরোধপত্রের অনু‌লি‌পি বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম মুঠোফোনে গণমাধ্যমকে বলেন, নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবরে একটি চিঠি দিয়েছেন। সেখানে পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদকে অপসারণের সুপারিশ করেছেন। পাশাপাশি প্রশাসক নিয়োগেরও পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেছেন। সেই চিঠির একটি অনুলিপি জেলা প্রশাসনকে পাঠিয়েছে নদী রক্ষা কমিশন। এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার বিভাগ আমাদের কোনো নির্দেশনা দেননি। সচিব মহোদয় নির্দেশনা দিলে তা দ্রুত বাস্তবয়নে জেলা প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহণ করবে। 

Link copied!