জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মীর মোশারেফ হোসেনকে (রাজীব মীর) বরখাস্তের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করছে হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।
সন্তুষ্টি প্রকাশ করল পরিবার
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন প্রয়াত রাজীব মীরের মা নিলুফা খানম। দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে তিনি বলেন, আমরা আদালতের এই রায়ে সন্তুষ্ট। রায়ে সঠিক বিচার পেয়েছি। ছেলেকে তো আর ফিরে পাবো না। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ক্ষতিপূরণ যাতে দ্রুত পাওয়া যায়, সেদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করছি।
বেতন ও সুবিধা পুনর্বহাল
২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি উচ্চ আদালতে রিট করেন রাজীব মীর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ জানুয়ারি বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। একইসঙ্গে এই শিক্ষককে কেন জ্যেষ্ঠতা বিবেচনা ও বকেয়া সব বেতন-সুবিধাসহ স্বপদে পুনর্বহাল করা হবে না, রুলে তাও জানতে চায় আদালত। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। তার সঙ্গে ছিলেন এম মঞ্জুর আলম ও তায়্যিব-উল-ইসলাম সৌরভ।
এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানিসহ আরও বেশ কয়েকটি অভিযোগে শিক্ষক রাজীব মীরকে চাকরিচ্যুত করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে এসব অভিযোগ তদন্তে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে এ তদন্ত কমিটি যে প্রতিবেদন দেয় তার কোনো অনুলিপি রিটকারীকে সরবরাহ না করে অর্থাৎ রিটকারীকে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সাক্ষ্য-প্রমাণ সম্পর্কে তাকে না জানিয়েই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
আইনজীবী তায়্যিব-উল-ইসলাম সৌরভ বলেন, “আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ না দিয়েই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে, যা বেআইনি ও অবৈধ।’’
প্রসঙ্গত, ভারতের চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৮ সালের ২১ জুলাই মারা যান রাজীব মীর (৪৩)। বিভোর নামের এক কন্যা সন্তানের জনক রাজীব মীরের লিভার সিরোসিস হয়েছিল। অধ্যাপক রাজীব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর করেন। তিনি কবিতা লেখা ছাড়াও বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করতেন।