শিক্ষার মান নিয়ে সংসদে বিরোধী দলের সংসদদের ক্ষোভ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ২৯, ২০২২, ০৬:১৫ পিএম

শিক্ষার মান নিয়ে সংসদে বিরোধী দলের সংসদদের ক্ষোভ

দেশের চলমান শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষার মান নিয়ে বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং নিয়োগ বাণিজ্য, মানহীন শিক্ষা ব্যবস্থায় জাতি ক্রমাগত অবনমন হচ্ছে বলে তারা মন্তব্য করেন। আর এসব কারণে দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বলেও তারা জানান।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুর বিল-২০২২ পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তার বিরোধিতা করে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ, রুমিন ফারহানা, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু, ফখরুল ইমাম, রুস্তম আলী ফরাজী বক্তব্য রাখেন।

হারুনুর রশীদ

বর্তমানে শিক্ষার গুণগতমান একেবারে ভেঙে পড়েছে উল্লেখ করে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন,“স্কুল-কলেজগুলোতে গত ১০ থেকে ১৫ বছরের অর্থ বিনিময়ের ছাড়া কোনো শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ হচ্ছে না। সম্প্রতি দপ্তরি নিয়োগেও ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা নিয়োগবাণিজ্য হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এ সময় গতানুগতিক শিক্ষা বাদ দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাব্যবস্থা চালুর অনুরোধ করেন হারুন।

রুমিন ফারহানা

বিএনপির আরেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, “আজকের এই বিল নিয়ে আমরা ১৫৭টি বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাস করলাম। কিন্তু বেকারত্বের হার বেড়েছে। বর্তমানে এমএ পাস বেকারের সংখ্যা ৩৭ শতাংশ, বিএ পাস বেকার ৩৭ শতাংশ, এইচএসসি পাশ ২৭ শতাংশ, এসএসসি পাস করা বেকারের সংখ্যা ২৮ শতাংশ। সুতরাং ৬৬ শতাংশের ওপরে শিক্ষিত বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যার মধ্যে মাত্র ৩ শতাংশ নিজ উদ্যোগে কিছু কাজ করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। আজ সারাদেশে যত শিক্ষিত বেকার আছেন তার ২১ শতাংশ মাত্র চাকরি পেয়েছেন।

মুজিবুল হক চুন্নু

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামো খুবই সুন্দর। কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থা কর্মবিমুখ। শিক্ষকরাও তেমনভাবে প্রশিক্ষিত নন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেসব ছেলে-মেয়েরা বের হচ্ছেন তারা অধিকাংশই বেকার হয়ে ঘুরছেন।” এ সময় তিনি কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালুর জন্য জোরালো আহ্বান জানান।

ফখরুল ইমাম

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইচ্ছেমতো আর্থিক ব্যবস্থাপনা করছে জানিয়ে জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, “এটি বন্ধ করতে না পারলে দুর্নীতি বেড়ে যাবে, শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি নীতিমালা করা উচিত।”

তিনি আরও বলেন, “দেখা যাচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন নীতিমালা হচ্ছে। এগুলো বন্ধ না হলে শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, শিক্ষাবাণিজ্য বেড়ে যাবে।”

রুস্তম আলী ফরাজী

সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান নির্ণয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) দিয়ে একটি সমীক্ষা করা উচিত বলে মত দেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী। স্কুল কলেজের গভর্নিং বোর্ডে এমপিদের সংযুক্তি নিয়ে কোর্টে যে মামলা চলমান সে বিষয়ে দ্রুত সমাধানের জন্য আইনজীবী নিয়োগের পরামর্শ দেন তিনি।

Link copied!