আগস্ট ১১, ২০২৫, ০৬:০৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার বিষয়ে ৪৮ শতাংশ মানুষ এখনও সিদ্ধান্ত নেননি। আর ৫১ শতাংশ মানুষ পূর্ণ সংস্কারের পর নির্বাচন দেওয়ার পক্ষে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক এবং ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) পরিচালিত এক টেলিফোন জরিপে এমনটাই উঠে এসেছে।
সোমবার, ১১ আগস্ট রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে জরিপের তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়েছে, দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ মব সহিংসতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। অন্তবর্তী সরকারের গ্রহণযোগ্যতাও আগের চেয়ে কমেছে বলে জানানো হয়েছে জরিপে।
গত ১ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত ৬৪ জেলায় ৯ হাজার ২০৩ জনকে ফোন করা হলে, প্রশ্নোত্তরে অংশ নেন ৫ হাজার ৪৮৯ জন। অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক গতি-প্রকৃতি, অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম, নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে তরুণদের ভাবনা জানতে এ উদ্যোগ।
৭০ শতাংশ মনে করেন আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তবে ভোট দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন আগের চেয়েও বেশি মানুষ। অক্টোবরের ৩৮ শতাংশের জায়গায় বেড়ে হয়েছে ৪৮ শতাংশ।
জরিপে আরও বলা হয়েছে, যারা ভোট দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের মধ্যে ১২ শতাংশ বিএনপিকে, ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ জামায়াতে ইসলামীকে, ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ আওয়ামী লীগকে এবং ২ দশমিক ৮০ শতাংশ জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ভোট দিতে চান বলে জানিয়েছেন।
গত অক্টোবরে জরিপে একই প্রশ্নের উত্তরে ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ বিএনপি, ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ জামায়াত ও দুই শতাংশ মানুষ এনসিপিকে ভোট দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। এতে দেখা যাচ্ছে গত ৮ মাসে বিএনপি ও জামায়াতের ভোট কিছুটা কমলেও এনসিপির সামান্য বেড়েছে।
বিআইজিডির পিএইচডি সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মির্জা এম হাসান বলেন, ‘আমার মনে হয় মানুষ এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমি ভেবেছিলাম মানুষ সিদ্ধান্তের কথা বলবে। যেটা সবাই অপেক্ষা করছি যে অপিনিয়ন পোল কি বলে, নির্বাচনে কারা টিকবে বা কারা এগিয়ে আছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা দুটোই কিন্তু অনেক বেড়ে গেছে। মব ভায়োলেন্সের কথা বলা হয়েছে, মানুষের মাথায় মব ভায়োলেন্স কাজ করছে।’
২০২৪ এর আগস্টে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে যে প্রত্যাশা ছিল তা ক্রমেই কমছে। সরকারের কাজের মূল্যায়ন স্কোরও বছর ঘুরতেই কমেছে ১২ পয়েন্ট।
বিআইজিডির পিএইচডি সিনিয়র রিসার্চ ফেলো আসিফ শাহান বলেন, ‘এখানে ব্যবসায়িক মন্দার ব্যাপারটাও আছে। আমি রাজনীতি কোনদিকে যাচ্ছে এটা নিয়ে চিন্তিত। এটার রিফলেকশন আপনি মব ভায়োলেন্সে দেখতে পাচ্ছেন, নিরাপত্তার দিকে দেখতে পাচ্ছেন। নিরাপত্তা ইস্যুটা মানুষের কাছে একটা কনসার্ন হয়ে গেছে।’
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই, দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার অবসান চেয়েছেন।