সরকারের পতন ঘটাতে বড় আন্দোলন করতে চায় বিএনপি। বিএনপি নিজেও মনে করে আন্দোলনের এখন যা পরিস্থিতি তা দিয়ে সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। তাই পূজার পর বড় আন্দোলন শুরু করতে চায় দলটি। তার আগে ঢাকায় মহাসমাবেশ বা বড় ধরনের কর্মসূচি থেকে সরকারকে পদত্যাগ করতে সময়সীমা বেঁধে আলটিমেটাম দিতে পারে তারা।
দলীয় সূত্র জানাচ্ছে, পূজার পর অক্টোবরের শেষের দিকে অলআউট আন্দোলন শুরু করবে বিএনপি। ভিসানীতিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে নভেম্বরের শুরুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আন্দোলন চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে চায় দলের হাইকমান্ড। কোনো কারণে ওই সময়ের মধ্যে দাবি আদায় সম্ভব না হলে তফসিল ঘোষণার পরও আন্দোলন অব্যাহত রাখবে তারা।
আর সেজন্য যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সাথেও আলাপ চলছে বলে নেতারা জানান। আর বিএনপি মনে করে চলতি মাস থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরো বাড়বে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, বিএনপির ভারপাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুমতি পেলেই আন্দোলনের কর্মসূচি দ্রুতই চূড়ান্ত হবে। আদালত ঘেরাওয়ের কর্মসূচিতে তারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সচিবালয় ও ঢাকা ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রয়োজন হলে হরতালের মতো কর্মসূচিও দেবে। তাদের কথা, এখন এমন কর্মসূচি দেওয়া হবে যাতে সরকার পদত্যাগে বাধ্য হয়। তারা মনে করে, যে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলছে তাতে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ছে। তবে এই কর্মসূচিতে সরকার পদত্যাগ করবে বলে মনে হয়না। সরকার যাতে পদত্যাগ করে তেমন কর্মসূচি দেওয়া হবে।
এবার সব কর্মসূচিই যুগপৎভাবে পালন করা হবে। বিএনপির সাথে যুগপৎ আন্দোলনে যে ৩৭টি দল যুক্ত হয়েছে তার বাইরে আরো কয়েকটি দলও একই কর্মসূচি পালন করবে বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে অন্যতম জামায়াতে ইসলামী । তবে বিএনপি এবার তার সব ধরনের সহযোগী সংগঠনকে একসাথে মাঠে নামাতে চায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের নীতি নির্ধারক এক নেতা দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, ছাত্ররা যাতে আন্দোলনে সক্রিয় হয় এজন্য অন্যান্য ছাত্র সংগঠনকে নিয়ে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের মতো কিছু একটা করার পরিকল্পনা চলছে। আন্দোলন কঠোর হলে সব সময় মাঠে থাকবে এই দলটি, মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেই জানায় ছাত্রদলের এই নেতা।
বিভিন্ন সূত্র থেকে আরও জানা গেছে, বিএনপি মনে করে আন্দোলন সফল করতে হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের মাঠে নামাতে হবে । এছাড়া বিএনপি পেশাজীবীসহ শ্রমিক সংগঠনগুলোকেও সক্রিয় করার কাজ করছে। তাদের সাথে ধারাবাহিক বৈঠক চলছে। জোট গঠন করার পরিকল্পনাও চলছে।
দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি আগামী দুই মাস তাদের দাবি মানতে সরকারকে বাধ্য করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময় বলে ভাবছে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বলছেন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচন প্রশ্নে সরকারকে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে আসতে বাধ্য করতে প্রয়োজনীয় সব কিছু করার জন্যই প্রস্তুত হচ্ছেন তারা।