ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চান বেশিরভাগ মানুষ

আওয়ামী লীগ থেকেও শোচনীয় অবস্থায় ছাত্রদের নেতৃত্বের জাতীয় নাগরিক পার্টির

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ৮, ২০২৫, ০৭:২৬ পিএম

আওয়ামী লীগ থেকেও শোচনীয় অবস্থায় ছাত্রদের নেতৃত্বের জাতীয় নাগরিক পার্টির

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে আবারো পালাবদলের ইঙ্গিত মিলছে নতুন এক জরিপে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চান জরিপে অংশ নেওয়া ৫৮ শতাংশ মানুষ। আর ভোটের রাজনীতিতে জনপ্রিয়তার শীর্ষে বিএনপি। অন্যদিকে, জরিপ অনুযায়ী, ছাত্রদের নেতৃত্বে নতুন দলের অবস্থা বিগত আওয়ামী লীগ থেকেও শোচনীয়।  

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনগণের মনোভাব ও প্রত্যাশা নিয়ে ইনোভিশন কনসালটিং এই জনমত জরিপ করে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ সময়কালে পরিচালিত এই জরিপে ভোটারদের মতামত, রাজনৈতিক অভিমুখ এবং নির্বাচনী প্রত্যাশার বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

গত ৬ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূস জানান, যদি রাজনৈতিক দলগুলো ভোটের আগে কম সংস্কার চায় তাহলে নির্বাচন ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে, আর যদি একটু বেশি সংস্কার চায় তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তবে নতুন এই জরিপ অনুসারে, ৫৮% ভোটার চান ২০২৫ সালের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। আর আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন চান মাত্র ৮ শতাংশ ভোটার।

ভোটারদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রার্থীর যোগ্যতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, যেখানে ৩৮% ভোটার মনে করেন সংসদ সদস্যের আগের কার্যক্রম বিবেচনা করেই তারা ভোট দেবেন। এছাড়া ২১.৬% ভোটার স্থানীয় রাজনৈতিক কার্যক্রমকে এবং ২০.৫% ভোটার ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে ভোটের সিদ্ধান্তে প্রভাবশালী বলে মনে করেন।

জরিপ অনুযায়ী, ৪২% ভোটার বিএনপিকে সমর্থন করছেন, যেখানে জামায়াত ইসলামী পেয়েছে ৩১.৫৬% ভোট এবং আওয়ামী লীগ পেয়েছে ১৩.৯৬% ভোট। নতুন ছাত্র নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল মাত্র ৫.১৪% সমর্থন পেয়েছে, যা মূলত তরুণদের মধ্যে বেশি গ্রহণযোগ্য।

বিভাগীয় পর্যায়ে, বিএনপি ছয়টি বিভাগে (বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, সিলেট) এগিয়ে রয়েছে, অন্যদিকে খুলনা ও রংপুর বিভাগে জামায়াত ইসলামী এগিয়ে রয়েছে।

প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার
এদিকে, জরিপ অনুসারে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জনগণের প্রধান প্রত্যাশাগুলোর মধ্যে রয়েছে—দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ (৬৯.৬%), আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি (৪৫.২%) এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি (২৯.১%)। তবে অধিকাংশ ভোটার মনে করেন, অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার তাদের প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ করতে পারেনি। মাত্র ২.৬২% ভোটার মনে করেন যে সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি সফল হয়েছে, যেখানে ৫৫.০৫% ভোটার মনে করেন এই ক্ষেত্রে কোনও উন্নতি হয়নি।

ঠিক একই ভাবে, জরিপে অংশ নেওয়া ৫৮.২৮% আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়, ৭৪.২১% কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে, ৫৪.৩৫% দূর্নীতি কমানোর ক্ষেত্রে ৬৮.২৬% ভোটের পরিবেশ সৃষ্টিতে এবং ৬২.২৮% ব্যবসার পরিবেশ রক্ষায় অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ বলে মনে করেন।

ভবিষ্যৎ সরকারের কাছেও জনগণের প্রধান চাহিদা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ (৭১.২%), আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি (৫২.২%) এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি (৩৯.৭%)। তবে শহরাঞ্চলের ভোটাররা গ্রামীণ ভোটারদের তুলনায় সংস্কারমূলক পরিবর্তনের বিষয়ে বেশি আগ্রহী।

 

Link copied!