পাঠ্যবইয়ের কাগজ কেনার সঙ্গে রাখাল রাহার ‘কোনো সম্পর্ক নেই’: এনসিটিবি চেয়ারম্যান

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ১১, ২০২৫, ০৭:০৯ পিএম

পাঠ্যবইয়ের কাগজ কেনার সঙ্গে রাখাল রাহার ‘কোনো সম্পর্ক নেই’: এনসিটিবি চেয়ারম্যান

ছবি: সংগৃহীত

পাঠ্যবই ছাপার কাগজ কেনার সঙ্গে লেখক, গবেষক ও শিক্ষাবিদ রাখাল রাহার ‘কোনো সম্পর্ক নেই’ বলে জানিয়েছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান।

একই সঙ্গে তিনি এও জানিয়েছেন যে, রাখাল রাহা পাঠ্যবই ছাপার কাগজের ব্যবসায় ৪০০ কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য করেছেন বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা ‘অপপ্রচার’।

বিষয়টি নানা আলোচনা-সমালোচনার মুখে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করলেন এনসিটিবি চেয়ারম্যান।

মঙ্গলবার, ১১ মার্চ দুপুরে মতিঝিলে পাঠ্যপুস্তক ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেছেন, “রাখাল রাহা জানেন না আমাদের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পর্কে। উনার কোনো ধারণা নাই।”

যে কাগজ কেনা নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে তার আগেই রাখাল রাহা এনসিটিবির কাজ শেষ করে চলে গেছেন দাবি করে বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেছেন, “উনিতো ডিসেম্বরের পরে চলে গেছেন।”

কাগজের দাম বেড়ে গেলে জানুয়ারির মাসের প্রথম দিকে আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক রিয়াজুল।

পাঠ্যবই পরিমার্জনে দেরি হওয়ার চলতি বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই তুলে দেওয়া যায়নি। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসেও এখনও এক কোটি কপির বেশি পাঠ্যবই ছাপা বাকি আছে।

৩৯ কোটি ৬০ লাখ পাঠ্যবই বিতরণ করার কথা থাকলেও সোমবার পর্যন্ত ৩৮ কোটি ২৯ লাখ ৬১ হাজার কপি ছাপার কাজ শেষ হয়েছে। ছাপা ও বিতরণের বাকি কাজ শেষ করতে ‘আরও এক সপ্তাহ’ লাগতে পারে বলে আশা করছে সরকার।

বছরের শুরুতে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে যখন পুরোদমে পাঠ্যবই ছাপার কাজ চলছিল তখন কাগজের দাম বেড়ে যায়। পরে এনসিটিবির মধ্যস্থতায় ৭ হাজার ৮০০ টন কাগজ আমদানি করা হয়েছিল।

লেখক, গবেষক ও শিক্ষাবিদ রাখাল রাহা পাঠ্যবই ছাপার কাগজ ব্যবসার ৪০০ কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ তুলে সম্প্রতি খবর প্রকাশ করে দুইটি সংবাদমাধ্যম।

তাদের খবরে দাবি করা হয়, বাজারে এক লাখ ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকায় কাগজ পাওয়া গেলেও মুদ্রণপ্রতিষ্ঠানগুলোকে জিম্মি করে টনপ্রতি দাম নেওয়া হয়েছে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা।

চলতি বছর পাঠ্যবই ছাপায় কাগজের বাজারদরের চেয়ে মুদ্রণপ্রতিষ্ঠানগুলোকে টনপ্রতি ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা বেশি দিতে হয়েছে অভিযোগ তোলা হয় সংবাদমাধ্যম দুটির খবরে।

এনসিটিবির কর্মকর্তা ও রাখাল রাহার নেতৃত্বে কাগজের দাম নিয়ে কমিশন বাণিজ্য চলে বলে অভিযোগ তুলে সংবাদমাধ্যম দুটি দাবি করে, তানভীর নামের এক ছাত্র সমন্বয়ক এর পেছন থেকে কাজ করেছেন। যদিও আলোচনা-সমালোচনার মুখে প্রতিবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছে সংবাদমাধ্যম দুইটি।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান বলেন রিয়াজুল হাসান, “কাগজ কেনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্কই নেই।”

তিনি বলেন, “এখানে গল্পটা সাজানো হয়েছে ৪০০ কোটি টাকার, ৪০০ কোটি টাকার কাগজতো আমদানিই করা হয়নি। ১০০ কোটির কাগজ আমদানি করা হয়েছিল।”

রাখাল রাহাকে পাঠ্যবই পরিমার্জনের দায়িত্ব দেওয়ার যৌক্তিকতাও তুলে ধরেন এনসিটিবি চেয়ারম্যান। 

তিনি বলেন, “উনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছিলেন, পাশাপাশি আইইআর (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট) থেকে বিএড ও এমএড করেছিলেন। শিশুদের সাইকোলজি, শিশুদের বিষয়ে তার কাজ আছে। এ বিষয়ে তার কিছু বইও আছে।

“আগের শিক্ষাক্রম বাতিলের জন্য রাখাল রাহার নেতৃত্বে অভিভাবকরা আন্দোলন করেছেন। সে কারণেই আমরা আগের কারিকুলামে ফিরে আসতে পারছি।”  

Link copied!